চা পান করার ১০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
চা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। এজন্য আমাদের জানতে হবে যে চা খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়। চা প্রায় আমাদের সকলের ই প্রিয়। চা হল বিশ্বের জ্নপ্রিয় দ্বিতীয় পানীয়।চা খাওয়ার ফলে আমাদের শরিরের একাধিক সমস্যা দূর করে।
চা তে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় চা খাওয়ার ফলে স্নায়ু আরাম অনুভূত করে কিন্তু চা যে শুধু উপকার করে তা কিন্তু না কেনোনা চিনি দিয়ে চা খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে নানাধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। আজকের এই পোস্টটির মাধ্যমে আমি আপনাদের জানাবো চা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতাগুলো কি কি
পোস্ট সূচীপত্রঃ চা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা
- চা খাওয়ার উপকারিতা
- চা নাকি কফি কোনটা বেশী উপকারী
- চা মানষিক চাপ কমাতে সাহায্য করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে চা
- চা খাওয়ার ফলে হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে
- ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে চা
- বাতের ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করে চা
- মাথা ব্যাথা কমাতে চা
- মাইগ্রেন কমাতে সাহায্য করে চা
- চা খাওয়ার ফলে নার্ভ শান্ত করে
- অতিরিক্ত চা খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- লেখকের শেষকথাঃ চা খাওয়ার উপকারিতা
চা খাওয়ার উপকারিতা
আপনারা অনেকেই চা খাওয়ার
উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না।চা ভিটামিন,মিনারেল,ফাইবার,ক্যাফিন, এবং অ্যান্টিও অক্সিডেন্ট প্রদান করে
থাকে । সেইসাথে প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো এসিড বিদ্যামান এই উপকারী চা তে।
যাবতীয় সমস্যা দূর করতে পারেন এই চা। তাই আমাদের প্রতি দিন চা খাওয়া উচিত ।
এছাড়াও চা খেলে আমাদের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়।
চা খেলে আমাদের মানষিক চাপ কমে যায়, হৃদপিণ্ড ভালো থাকে, ক্যানসারের
সম্ভাবনা কমে যায়, মাথা যন্ত্রনা কমে যায়। এছাড়াও আরো অনেক সমস্যা দূর করতে
পারে চা। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক চা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
চা নাকি কফি কোনটা বেশী উপকারী
চা তে ক্যাফেইন থাকার কারনে মানুষ প্রতিদিন অনেক কাপ চা পান করেন। ঘুমের ভাব
কমিয়ে মস্তিস্ক সুস্থ সতেজ করতে চা খুবই দ্রুত কাজ করে। চায়ের মতো কফিও বর্তমানে
অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠে্ছে।কিন্তু কফি চা এর মতো এতটা জনপ্রিয় না। এর কারণ হতে
পারে এতে থাকা ক্যাফেইনের পরিমাণের কারণে। চা তে ক্যাফেইনের পরিমাণ কম
হওয়ার কারণে সবাই চা পান করেন।
সমান সাইজের এক কাপ কফিতে ক্যাফেইনের পরিমাণ থাকে ৮০ থেকে ১১৫
মিলিগ্রাম। এবং একই পরিমাণ চা তে ক্যাফেইনের পরিমাণ থাকে ৪০ মিলিগ্রাম যা
অনেক কম কফির থেকে।লন্ডনের এক বিশ্ববিদ্যালয় এর গবেষণায় দেখা গেছে যে এক দিনে
সমান পরিমাণে চা এবং কফি খাওয়া ব্যাক্তিদের মধ্যে মনোযগে একটু সমস্যা দেখা দেয়
কিন্তু কফি পান করা ব্যক্তিদের ঘুমের সমস্যা হয়।এবং চা পান করা ব্যাক্তিদের ঘুম
ভালো হয় এবং ঘুম দীর্ঘ ও প্রশান্তিদায়ক হয়।
চা মানষিক চাপ কমাতে সাহায্য করে
চা তে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মানবদেহকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে
এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সাথে সুস্বাস্থ্য ভালো রাখতে
সাহায্য করে এই উপকারী পানীয় চা। চা পান করার ফলে স্নায় আরাম অনুভুত বোধ
করে।সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান ও চা উৎপাদন প্রযুক্তি
বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এফ এম সাইফুল ইসলাম জানান যে
আমাদের শরীর বিভিন্ন সময়ে নানাধরনের ক্লান্তি বা স্টেট্র অনুভূত করে
এবং অক্সাইডস নামে এক উপাদান সৃষ্টি করে। ফলে চা পান করারা ফলে এই অ্যান্টি
অক্সিডেন্ট আমাদের শরীর থেকে অক্সাইডস কে ধ্বংস করে দেয় । চা যে
মানুষের স্নায়ুকে শান্ত করে সে বিষয়টি বেশ কিছু গবেষণাতেও পাওয়া গেছে যে যারা
নিয়মিত চা পান করেন তাদের হতাশার ঝুঁকি চা পান না করা ব্যক্তিদের তুলনায় ৩৭
শতাংশ কম থাকে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে চা
চা খাওয়ার ফলে যে শুধু শরীর চাঙা হয় তা কিন্তু নয় । চা পান করার ফলে আমাদের
নানারকমের সমস্যা দূর হয় এবং চা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ২০০৯
সালে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত কয়েক কাপ চা পান করলে ডায়াবেটিক্স এর
ঝুঁকি কমে যায়।চায়ে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরে ইন্সুলিন নেওয়ার
প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
চা নিয়মিত পান করার ফলে ইনসুলিনকে ক্ষতিগ্রস্থ না করে রক্তের গ্লুকোজকে
দক্ষতার সঙ্গে সামলায়। এছাড়াও আরেক গবেশনায় দেখা গেছে যে নিয়মিত চা পান করার
ফলে শরীরের কোষ থেকে ১৫ গুণ বেশি ইনসুলিন বের হয় যার ফলে ডায়াবেটিক্স
নিয়ন্ত্রনে থাকে ।
চা খাওয়ার ফলে হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে
নিয়মিত চা পান করার ফলে হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে । এক গবেশনায় দেখা গেছে
যে দিনে ছয় কাপের বেশি চা পান করা ব্যক্তিদের হৃদরোগের শঙ্কা এক-তৃতীয়াংশ
পর্যন্ত কমে যায়। চায়ে বিদ্যামান অ্যান্টিওকিদেন্ত হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে
সাহায্য করে। প্রতেকদিন কয়েক কাপ চা পান করার ফলে এই হৃৎপিণ্ড এর সমস্যা
প্রতিরোধ করা সম্ভব।
এছাড়াও চা পান করার ফলে হৃৎরোগ এবং স্টোক এর ঝুঁকি অনেক কমে যায়।এক
গবেষণায় দেখা গেছে যে চা পান করা ব্যাক্তিদের চা পান করা মানুষদের থেকে ১৩% কম
।
ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে চা
বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরধ করতে সাহায্য করে চা । চা তে বিদ্যামান
পুষ্টিগুণ কম হলেও এতে বিদ্যমানলিফেনলস, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং ক্যাটেচিন নামক
উপাদানের উপস্থিতি রেডিক্যালস তৈ্রি করতে বাধা প্রদান করে যা আমাদের
শরিরের কোষগুলকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে । এছাড়াও চায়ে
বিদ্যামান লিফেনলসের পরিমাণ ২৫% এর বেশী হওয়ার কারণে চা উচ্চ রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে।
বাতের ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করে চা
বাতের ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চা। কেনোনা চা
তে বিদ্যামানঅ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি যা আমাদের শরিরের যেকোনো ব্যথা
নিয়ন্ত্রণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে
আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের অনেক জায়গায় ব্যথা,ফোলাভাব,এইসব কমাতে কার্যকরি
উপাদান হলো চা । বাতের ব্যথা নিরাময়ে ঘরোয়া উপাদান হলো এই চা ।
মাথা ব্যাথা কমাতে চা
চা যেমন আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করে তেমনি আঠা মাথা ব্যাথা কমায়। চা
তে বিদ্যামান ক্যাফেইন এর কারণে মাথা ব্যথার প্রভাবকে হ্রাস
পায়। মাথা ব্যাথার কারণ অনেক থাকতে পারে তাই চা খেয়ে কাজ না হলে
ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
মাইগ্রেন কমাতে সাহায্য করে চা
মাইগ্রেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা সমসস্যায একবার দেখা দিলে আর সেরে উঠে না । এই
ধরনের সমস্যা যাদের আছে তাদের অনেক সমস্যার স্মমুখিন হতে হয়। কারণ অনেক খাবার
খাওয়ার ফলে মাইগ্রেন বেড়ে যায় আবার কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলো খাবার পরে
মাইগ্রেন কমাতে সাহায্য করে। মাইগ্রেন কমাতে সাহায্য করে ল্যাভেন্ডার চা।
এটাতে বিদ্যামান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা মাইগ্রেন এর সমস্যা দূর করতে
পারে। এই চা খাওয়ার্ ফলে মস্তিষ্ক রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং যার ফলে মাইগ্রেন
এর সমসসা দূর হয়।
চা খাওয়ার ফলে নার্ভ শান্ত করে
চা খাওয়ার ফলে আমাদের নার্ভ শান্ত থাকে । চা তে বিদ্যামান থাকা
অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান মস্তিষ্কে রক্ত ও অক্সিজেনের সরবরাহ বৃদ্ধি করে।
তাই মানুষিক চাপ দূর করতে নিয়মতি চা পান করুন। চা তে বিদ্যামান অনেক উপকারি
উপাদান রয়েছে যা আমাদের অনেক সমস্যা দূর করতে সক্ষম।
অতিরিক্ত চা খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- সব কিছুর মতোই অতিরিক্ত চা পানে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক বেশী চা পান করলে অনেক সসমস্যা দেখা দিতে পারে।
- অতিরিক্ত চা পানে আয়রনের শোষণ হ্রাস পায় । যার ফলে শরীরে আয়রন গ্রহনের সমস্যা দেখা দেয়
- অতিরিক্ত চা পানের ফলে চা তে বিদ্যামান ক্যাফেইন ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করে।
- চায়ের মধ্যে থিওফাইলিন থাকায় এটা ডিহাইড্রেশনের এর কারণ হতে পারে যার ফলে হজমের সমস্যা দেখ দেয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।
- গর্ভবতী নারীদের চা পান করা উচিত নয় কেনোনা এতে চায়ে বিদ্যামান ক্যাফেইন বাচ্চা বিকাশে বাধা দিতে পারে । এবং এর কারণে গর্ভপাত ঘটাতে পারে।
- অতিরিক্ত চা পানে প্রোস্টেট ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
- চা শরীরে থায়ামিন বা ভিটামিন বি শোষণ রোধ করে যা আমাদের শরীরের বেরিবেরি রোগের কারণ হতে পারে
- চা আমাদের শরীর থেকে ভিটামিন বি শোধন রোধ করে যার কারণে আমাদের শরীর ভিটামিন বি গ্রহন করতে পারেন না ।
- অতিরিক্ত চা পান করার ফলে বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে ।
- চায়ের মদ্ধে বিদ্দামান এসিড আমাদের বুক জালা পোরার কারন হতে পারে
লেখকের শেষকথাঃ চা খাওয়ার উপকারিতা
প্রিয় পাঠক, আজকের এই পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি চা খাওয়ার
উপকারিতা এবং অপকারীতা সম্পর্কে। আপনাদের যদি এই পোস্ট বুঝতে কোনো অসুবিধা হয়
তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
ইউনিকমিস্ট্রির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন আমরা আপনাদের পজিটিভ কমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছি
comment url