কম খরচে দার্জিলিং ভ্রমণ কীভাবে যাবেন কোথায় ঘুরবেন বিস্তারিত

কম খরচে দার্জিলিং ভ্রমণ করার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আজকের এই পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো যে কীভাবে অনেক কম খরচে দার্জিলিং ভ্রমন করবেন সে সম্পকে। দার্জিলিং খুবই সুন্দর একটা জায়গা। দার্জিলিং এর পাহাড় এবং মেঘ দেখতে সবাই অনেক ভালবাসে। 

কম- খরচে -দার্জিলিং- ভ্রমণ

আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের জানবো দার্জিলিংয়ে কম খরচে কীভাবে যাবেন কোথায় ঘুরবেন বিস্তারিত সব কিছু। দার্জিলিং আমন একটা জায়গা যে জায়গায় ঘুরতে না গেলে আপনি কখনো বুঝতে পারবেন না দার্জিলিং এর সৌন্দর্য। আজকের এই কম খরচে দার্জিলিং ভ্রমণ পোস্টের মাধ্যমে। 

পেইজ সূচিপত্র ঃ কম খরচে দার্জিলিং ভ্রমণ

কম খরচে দার্জিলিং ভ্রমণ

আপনারা যদি কম খরচে দার্জিলিং ভ্রমণ করতে চান তাহলে আপনাকে কিছু টিপস ফলো করে টুর দিতে হবে। দার্জিলিং এর সৌন্দর্য এর জন্য দার্জিলিং অনেক আগে থেকেই বিখ্যাত। দার্জিলিং এ রয়েছে আকাশছোঁয়া সব পাহাড় এবং প্রায় সময় পাহারের উপর দিয়ে মেঘের খেলা দেখতে পারবেন। সেখানে দেখার মতো এমন কিছু জায়গা রয়েছে---

যেগুলো আপনারা অনেকেই দেখেন নি। আপনি যদি পাহাড় প্রেমী হয়ে থাকেন তাহলে দার্জিলিং আপনাকে একবার হলেও ভ্রমন করা উচিত। যারা যারা প্রকৃতি ভালবাসেন তারা সবাই ছুটে চলে যান দার্জিলিং এ পাহাড় ও মেঘের নানা রকম সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। দার্জিলিং শহর অনেক সুন্দর একটা জায়গা তাই আপনারা যদি কম খরচে দার্জিলিং ভ্রমন করতে চান তাহলে পড়তে থাকুন বিস্তারিত। 

দার্জিলিংয়ে কেন যাবেন

আপনার দার্জিলিং যাওয়ার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে এবং আপনারা অনেক কম বাজেটে দার্জিলিং যেতে পারবেন। প্রথমেই দার্জিলিং সম্পর্কে আপনাদের কিছু স্বচ্ছ ধারণা দেই। দার্জিলিং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬৭০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। আর এই শহরটি ৬৭০০ ফুট উচ্চতা হওয়ার কারণে এই শহরে মোটামুটি বারোমাস ঠান্ডা থাকে ।

আর আপনি যদি কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই দার্জিলিং আসতে হবে। এছাড়াও আপনি দার্জিলিংয়ে গিয়ে দেখতে পারবেন পাহাড়ি ডলে সাজানো চা বাগান আর পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু রেলওয়ে স্টেশন যার নাম ঘুম। এ রেলস্টেশনটি পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত রেলওয়ে স্টেশন যা দার্জিলিং এ অবস্থিত। 

তাছাড়াও দার্জিলিং এ গিয়ে আপনি বিখ্যাত টয় ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন এবং তার সৌন্দর্য গুলো উপভোগ করতে। বিশেষ করে যারা পাহাড় পছন্দ করেন এবং মেঘ যাদের অনেক পছন্দ তাদের জন্য সবচেয়ে ভালতে ডেস্টিনেশন হচ্ছে দার্জিলিং।দার্জিলিং কে মেঘের স্বর্গরাজ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।তাই অনেকেই ভ্রমন করেন দার্জিলিং। 

প্রতিবছর মেঘ এবং পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রত্যেক হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসেন দার্জিলিংয়ে। দার্জিলিংয়ে রয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা, যেখান থেকে আপনারা কাঞ্চনজঙ্ঘার নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে পারবেন। এছাড়াও দার্জিলিং এর জনপ্রিয় একটা স্পট হচ্ছে টাইগার হিল। যেখান থেকে আপনারা সূর্যোদয় উপভোগ করতে পারবেন। 

এই টাইগার হিল থেকে সূর্যোদয় এর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। তাই এই সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য লক্ষ লক্ষ পর্যটক এসে ভিড় জমায় এই টাইগার হিলে। আবার দার্জিলিং শহরকে বলা হয় শৈল শহরের রাণী। এছাড়াও দার্জিলিং এর দেখার মতো অনেক টুরিস্ট স্পট রয়েছে যেগুলোতে গিয়ে আপনারা প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। 
কম- খরচে -দার্জিলিং- ভ্রমণ

দার্জিলিং কিভাবে যাবেন 

কীভাবে যাবেন কোথায় ঘুরবেন বিস্তারিত সব কিছু আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই পোস্টে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে দার্জিলিং কম খরচে ভ্রমন করবেন ---

বাস

দার্জিলিং যাওয়ার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম ইন্ডিয়ার ভিসা নিতে হবে। যাদের ভিসা নেই ভিসা করতে চাচ্ছেন তারা ফুলবাড়ী পোর্ড সিলেক্ট করতে পারেন। ফুলবাড়ী পোর্ড সিলেক্ট করার পর আপনি ঢাকা থেকে পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধায় আসতে হবে তারপর সেখানে আপনাকে একবার ইমিগ্রেশন করার পর খুব তাড়াতাড়ি সেখান থেকে শিলিগুড়ি স্ট্যান্ড এ যেতে হবে ।

আর একটি রুট হচ্ছে লালমনিরহাট  জেলার বুড়িমারী থেকে চ্যাংড়াবান্ধা হয়ে যেতে হবে তবে এক্ষেত্রে আবার আপনার সময় বেশি লাগতে পারে। শিলিগুড়ি থেকে বাংলাবান্ধার দূরত্ব অনেক কম। এজন্য আপনি শিলিগুড়ি এসে বাস ট্যাক্সি জীপ সবই পাবেন দার্জিলিং যাওয়ার জন্য। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যেতে আপনার সময় লাগবে মাত্র দুই থেকে আড়াই ঘন্টা।

ট্রেন

আপনি যদি ট্রেনে যেতে চান তাহলে আপনি সরাসরি ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত ট্রেনে যেতে পারবেন। জলপাইগুড়ি থেকে বাছাই করে বা ট্যাক্সি করে দার্জিলিং এ পৌঁছাতে পারবেন। স্বল্প বাজেটের ক্ষেত্রে আমি সাজেস্ট করব রেলরুট কেননা এতে অনেক খরচ কমে যাবে আপনার। 

ঢাকা থেকে বিমানে

আপনি যদি ঢাকা থেকে বিমানে করে দার্জিলিং যেতে। চান তাহলে আপনাকে প্রথমে ঢাকা থেকে কলকাতা এয়ারপোর্ট এ পোঁছাতে হবে তারপর কলকাতা এয়ারপোর্ট থেকে বাগডোগরা এয়ারপোর্ট এ পোঁছাতে হবে সেখান থেকে কোনো ট্যাক্সি বা বাসে আপনি সরাসরি দার্জিলিং পৌছাতে পারবেন । 

দার্জিলিংয়ে কোথায় কোথায় ঘুরবেন 

  • টাইগার হিল থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা
  • বাতাসিয়া লুপ
  • হিমালয়ান জ্যু
  • হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট
  • রক গার্ডেন
  • মনেস্ট্রি ও প্যাগোডা
  • দার্জিলিং হিমালায়ান রেলওয়ে
  • দার্জিলিং চিড়িয়াখানা
  • বেঙ্গল ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম 
  • হিমালায়ান মাউন্টেননিয়ারিং ইন্সটিটিউট

টাইগার হিল থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা

কম- খরচে -দার্জিলিং- ভ্রমণ

টাইগার হিল এমন একটি জায়গা যেখান থেকে খুব সুন্দর ভাবে সূর্যোদয় দেখা যায়। সেই সৌন্দর্যের সাথে তুলনা হয়নি হয়না কোন কিছুরই। কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া ভোরের আলো বাড়ার সাথে সাথে দৃশ্যমান হয়। এই সুন্দর বরফের চাদরে ঘেরা কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া দেখতে আসেন অনেক দেশের হাজার হাজার পর্যটক। 

বাতাসিয়া লুপ

দার্জিলিং থেকে বাতাসিয়া লুপের দূরত্ব অনেক কম। তাই আপনাদের সেখানে যেতে তেমন কোনো কষ্ট করতে হয় না। দার্জিলিং থেকে বাতাসিয়া লুপের দূরত্ব ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার।সেখানে গিয়ে আপনি একটা অ্যাডভেঞ্চার করতে পারবেন আর সেটা হল পাহাড়ি টানেলের মধ্যে দিয়ে ট্রেন জার্নি। এই অ্যাডভেঞ্চার আপনাকে কিছুক্ষনের জন্য ---

মেঘের স্বর্গরাজ্যো হারিয়ে ফেলবে।এই জায়গায় আপনারা আরো প্রকিতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।

হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট

হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট দার্জিলিং থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটা চা বাগান। এই চা বাগানটি ্দার্জিলিং এর দ্বিতীয় প্রাচীনতম টি টেস্ট। এই চা বাগানটি এতো সুন্দর যে এইখান থেকে দার্জিলিংয়ের প্যানোরমিক ভিউ দেখতে পারবেন। এই বাগানটি অবস্থিত হিল কার্ট রোডের নিচে। এই চা বাগান অনেক সুন্দর যে আপনি এইটা কোনভাবেই মিস করবেন না।

রক গার্ডেন

রক গার্ডেন এই জায়গাটি দার্জিলিং শহর থেকে প্রায় নয় দশ কিলোমিটার দূরে। রক গার্ডেন জায়গাটিতে রয়েছে কংক্রিট দিয়ে নির্মিত ধাপে ধাপে সিঁড়ি ,সাজানো অনেক ধরনের বাগান,রক গার্ডেন জায়গাটিতে আরো রয়েছে একটি আকর্ষণীয় ঝরনা। সবমিলে জায়গাটি অনেক চমৎকার। বিশেষ করে ছবি তোলার জন্য এই জায়গাটি অনেক সুন্দর।

তাই দার্জিলিং গেলে আপনি অবশ্যই রকেট থেকে ঘুরে আসবেন। সেখানকার সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে অবশ্যই এছাড়াও রক গার্ডেনের খুব কাছেই একটি পার্ক রয়েছে তার নাম গঙ্গা মায়া পার্ক। আপনার হাতে সময় থাকলে আপনি সেই গঙ্গামায়া পার্ক থেকে ঘুরে আসতে পারেন। 

মনেস্ট্রি ও প্যাগোডা

মনেস্ট্রি ও প্যাগোডা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত প্রাচীন একটি মন্দির।এই মন্দিরে একটি বৌদ্ধ মূর্তি আছে যার উচ্চতা প্রায় ১৫ ফুট। এছাড়াও সেখানে চারটি বৌদ্ধ মূর্তি আছে যার নাম পিচ প্যাগোডা। এই জায়গাটি থেকে অনেক সুন্দর সূর্যদয় উপভোগ করতে পারবেন আপনি।তাছাড়া আপনারা এখানে দেখতে পারবেন বিভিন্ন মন্দির এবং প্যাগোডা। 

এখানে রয়েছে জাপানীদের তৈরি করা কিছু ঐতিহ্যবাহি মন্দির এবং প্যাগোডা। দার্জিলিং এর সবচেয়ে সুন্দর এবং অন্যতম হচ্ছে ঘুম মনেস্ট্রি। এই জায়গায় প্রায় সব মানুষ এই ঘুম মনেস্ট্রির সৌন্দর্য এবং কাড়ুকার্য দেখতে আসেন। এখানে রয়েছে অনেক বড় আকারের সব মূর্তি। 

দার্জিলিং হিমালায়ান রেলওয়ে

ছোট বাষ্প ইঞ্জিন চালিত একটা ট্রেন যা পাহাড়ের আকাবাকা রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। এই ট্রেন টয় ট্রেন নামে পরিচিত। এই ট্রেন জার্নি অনেক মনোমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা দেবে। একসময় একমাত্র যাতায়াতের ব্যবস্থা ছিল এই টয় ট্রেন। এই ট্রেন টি ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং যায় যা আপনি অনেক ইনজয় করবেন। 

দার্জিলিং চিড়িয়াখানা

দার্জিলিংয়ের পাহাড়ে অবস্থিত একটা চিড়িয়াখানা যা হিমালায়ান পার্ক নামে পরিচিত। এই পার্কটি প্রায় ৬৭.৫৭ একরের বিশাল জায়গা নিয়ে অবস্থিত। এই পার্কে আপনি হিমালায়ান নেকড়ে, ক্লাউডেড লিওপার্ড, কালো ভাল্লুক,রেড পাণ্ডা ও হিমালিয়ান স্নো লিওপার্ড এইসব আজব আজব প্রাণী ও বিরল কিছু পাখি দেখতে পারবেন।

এই পার্কে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে ৬০ রুপি দিয়ে টিকেট কেটে পার্কে প্রবেশ করতে হবে। এবং সেখানে আপনি যে প্রাণীগুলোর ছবি তুলবেন তার জন্য আলাদা করে ১০ রুপি দিতে হবে। এছাড়াও নাইটিংগেল পার্ক,ঝর্ণার পাশে অবস্থিত দার্জিলিং রক গার্ডেন,ঝর্ণার পাশে অবস্থিত দার্জিলিং এইসকল পার্কগুলো দার্জিলিং এর আশেপাশেই অবস্থিত ।

আপনার হাতে সময় এবং ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছা থাকলে এইসব পার্কে গিয়েও ঘুরে আসতে পারেন। সেখানে আপনারা অনেক রকমের প্রাণীর পাশাপাশি বিভিন্ন জন্তু দেখতে পারবেন। 

বেঙ্গল ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম

বেঙ্গল ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম অনেক সুন্দর জায়গা। এই জায়গাতে পরিবার নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।হিমালায়ান মাউন্টেনারিং ইন্সটিটিউট অবস্থিত এই বেঙ্গল ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম এর মধ্যে। এই মিউজিয়ামে রয়েছে নানা রকমের পশু পাখি। এছাড়াও এই মিউজিয়ামের একটা বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে একটা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পড়ে ছবি তুলতে পারবেন। 
কম- খরচে -দার্জিলিং- ভ্রমণ

হিমালায়ান মাউন্টেননিয়ারিং ইন্সটিটিউট

এই ইন্সটিটিউট এর মুল উদ্দেশ্য ছিল বিশ্ববাসিকে পাহাড় পর্বত সম্পর্কে উৎসাহ প্রদান করা বা আগ্রহ জন্মানো। বিশ্বের অনেক পাহাড় প্রেমীরা নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে এই হিমালায়ান মাউন্টেননিয়ারিং ইন্সটিটিউট এ আসে অনেক মানুষ। আর বর্তমানে এটি একটা পর্যটন হিসাবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এই হিমালায়ান মাউন্টেননিয়ারিং ইন্সটিটিউট থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় যা অনেক মনোমুগ্ধকর। 

দার্জিলিংয়ে  কী কী খাবেন

দার্জিলিং এর মানুষরা সাধারণত গরুর মাংস পছন্দ করেন। দার্জিলিং এ গিয়ে আপনি বাঙালী, চাইনিজ, সহ আরো অনেক রকমের খাবার পাবেন। কিন্তু যেখানে যাবেন ট্র্যাডিশনাল ফুড ট্রাই না করলে তো আর চলবে না। দার্জিলিং এর অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে স্ট্রিট ফুড। এছাড়াও সেখানে আপনারা  অনেক কম দামে বিভিন্ন স্ট্রিট ফুডের স্বাদ নিতে পারবেন। 

এইসব মল্‌ রোডের দিকে সন্ধয়ায় অনেক ধরনের খাবারের দোকান বসে। সেই খাবার্গুলো ট্রাই করতে পারেন। এছাড়া দার্জিলিং এ অনেক রকমের রেস্টুরেন্ট আছে। আপনি যদি বিফ খেতে চান তাহলে আপনাকে মুসলিম রেস্টুরেন্টে যেতে হবে। দার্জিলিং গিয়ে আপনি যেসব খাবার অবশ্যই খাবেন তা হলো পাকোড়া,সেকুয়া,ভেজ হাক্কা নুডলস----

আলুর দম, চিকেন মোমো, ভেজিটেবল মোমো এগুলো খাবার না খেলে আপনার ট্যুর সম্পুর্ন্ন হবে না।এছাড়াও আলু পরোটা, লুচি-আলুর দম, ডাম্পলিং স্যুপ এগুলো খেতে পারেন। আর দার্জিলিং এর চা তো অবশ্যই আপনাকে খেতে হবে। এই চা অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে। এবং দার্জিলিং এর কমলা অনেক ভালো হয় তা অবশ্যই খেয়ে দেখবেন।

দার্জিলিয়ে কি কি শপিং করবেন 

দার্জিলিং শহরের একদম প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মল রোড শপিং বা কোনো কিছু কেনাকাটা করার জন্য একদম পারফেক্ট জায়গা। আপনি নেপালি শাল, পেইন্টিংস, হ্যান্ডমেড শোপিচ, পুঁথির নেকপিস, হ্যাট, জ্যাকেট এগুলো সবই পেয়ে যাবেন এই মল্‌ রোডে। আর এই দার্জিলিং এর মধ্যে আপনি সবচেয়ে কম বাজেটে কেনাকাটা করতে পারবেন বাতাসিয়া লুপ নামে একটা শপিং সেন্টার।

এছারা আপনি সেখানে হাতে বানানো ব্যাগ,জুয়েলারি,হোম ডেকর আইটেম, ইত্যাদি পাবেন এই জায়গাগুলোতে। আর দার্জিলিং এর চা আপনি প্রায় দোকানেই পাবেন গ্রিন টি ,ব্লাক টি এইগুলো প্রায় সব দোকানেই বিক্রি করা হয়। এছারা দার্জিলিং এর বিগ বাজার বা সুপার শপ থেকে শপিং করতে পারেন এইখানে প্রায় সব কিছুই পাওয়া যায় ।

দার্জিলিয়ে কোথায় থাকবেন 

দার্জিলিং এ ভ্রমণকারীরা বেশী আসার কারণে এইটা টুরিস্ট এরিয়া। তাই এইখানে আপনি যেরকম বাজেটের রুম নিতে চান সেইরকম বাজেটেই রুম নিতে পারবেন। আপনারা চাইলে আবাসিক অথবা রেস্ট হাউজগুলতে থাকতে পারেন। এছাড়া আপনি যেই হোটেল এ উঠেন না কেন দামাদামি করে তারপর উঠবেন না হলে আপনার সাথে স্কাম হতে পারে ।

কল্ক টাওয়ার নামে একটা হোটেল আছে দার্জিলিং এ সেখানে আপনার অনেক ভালো লাগবে। সেখান থেকে আপনি নানারকম সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। কিন্তু এইখানে থাকতে হলে আপনার একটু বেশী টাকা খরচ হবে। তাছাড়াও মল রোড এর আশেপাশে আপনি অনেক রকমের হোটেল পাবেন। এখন আপনি আপনার বাজেট যদি কম থাকে তাহলে আপনি একটু লো বাজেটের হোটেলে থাকবেন । 

দার্জিলিং ভ্রমণ পয়েন্ট

দার্জিলিংয়ে ঘোরার জন্য অনেক জায়গা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু স্থান যেগুলো আপনি না দেখলে আপনি মিস করবেন সেই জায়গাগুলো হল---

মিরিক

দার্জিলিং শহর থেকে ৪৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই মিরিক শহর মনোরম আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এর জন্য বিখ্যাত। এই মিরিক এর মুল আকর্ষণ হল সুমেন্দু হ্রদ। এক হ্রদের একপাশ এ র‍য়েছে পাইন গাছের সারি আর একপাশে রয়েছে এক বিশাল বাগান যা দেখতে অনেক সুন্দর।তাছাড়াও আপনি এখানে ঘুরতে ঘুরতে কাঞ্জঞ্জঘার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন । 

তাছাড়া আপনারা এখানে ঘোরায় চরে ঘুরতে পারবেন।এই মিরিক শহর টির আবহাওয়া এতো সুন্দর যে আপনি এখানে যেকোনো সময় কোনরকম গরম লাগবে না শীত লাগবে না। এছাড়াও আপনি মিরিক শহর থেকে পশুপতি মার্কেটে যেতে পারবেন। এইখানে অনেক কম দামে কেনাকাটা করতে পারবেন এই জায়গায়। 

মিরিক শহরে গ্রীষ্মকাল এ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকে ২৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকে ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। 

চা টেস্টিং
দার্জিলিং এর চা যে বিখ্যাত তা কমবেশি সবাই জানে। তাই আপনারা দার্জিলিং গেলে অবশ্যই চা টেস্ট করতে ভুলবেন না। সেখানে আপনারা বিভিন্ন ধরণের চা পেয়ে যাবেন। যা একদম তাজা এবং অনেক মজাদার। 

হস্তশিল্প
দার্জিলিং শহরে আপনি গেলে অবশ্যই কিছু হস্শিল্প আপনার পছন্দ হবে। তাই সেখানে গেলে যা পছন্দ হবে অনেক কমে তা আপনি কিনতে পারবেন।

রেলওয়ে মিউজিয়াম
এই দার্জিলিং শহরের আরেকটা আকর্ষণীয় জিনিস হচ্ছে রেলওয়ে মিউজিয়াম। আপনি এই রেলওয়ে মিউজিয়ামে অনেক মজা পাবেন। আপনি এখানে ট্রেনে করে ঘুরলে অনেক মজা পাবেন এখানে পরিবেশ এতটা সুন্দর আপনাকে মুগ্ধ করে দেবে একদম। অনেক উঁচু উঁচু পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে এই ট্রেন যাবে তাই আপনার এটা দেখতে অনেক সুন্দর লাগবে মনটা ভাল হয়ে যাবে।

তাই আপনি যদি কখনো দার্জিলিং যান তাহলে অবশ্যই রেলওয়ে মিউজিয়াম জায়গাটা অবশ্যই ঘুরে দেখবেন। 
কম- খরচে -দার্জিলিং- ভ্রমণ

দার্জিলিং ভ্রমণ খরচ কত হবে 

খরচ কত হবে তা সম্পুর্ন আপনার উপর নির্ভরকরবে। আপনি কোন সময় যাবে কীভাবে যাবেন কি কি খাবেন আর কেমন মানের হোটেলে থাকবেন এর উপর নির্ভর করবে আপনার সম্পূর্ণ ভ্রমন খরচ। আপনি যদি কম বাজেট এ দার্জিলিং এ যেতে চান তাহলে আপনাকে একটা গ্রুপ করে নিয়ে ট্যুর এ যেতে হবে এতে আপনার খরচ অনেক কম হবে । 

আপনি যদি ট্রেন এ করে ঢাকা থেকে দার্জিলিং যেতে চান তাহলে আপনার খরচ কম হবে। একটু নিম্নমানের হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করলে আপনার খরচ অনেক কমে যাবে। এবং সেখানে কি আপনি যদি নিম্নমানের হোটেলে থাকতে পারেন তাহলে  আপনি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ভিতরে দার্জিলিং ভ্রমণ সম্পন্ন করতে পারবেন।

আর আপনি যদি মোটামুটি বাজেট দার্জিলিং যেতে চান তাহলে ২০- ২৫ হাজার টাকা নিয়ে ভিতরে ঘুরে আসতে পারবেন তিন থেকে চার দিন দার্জিলিং এ । 

দার্জিলিং ভ্রমনের পারফেক্ট সময় কখ্ন 

দার্জিলিং এ আপনি এপ্রিল থেকে জুন এই সময়ে ভ্রমণ করতে পারবেন এই সময় তে আবহাওয়া অনেক সুন্দর থাকে। কোনরকম ঝামেলা হবে না। ঘুরে অনেক মজা পাবেন এই এপ্রিল থেকে জুন এই সময়ে। তাছারাও আপনি অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এই সময়টাতে দার্জিলিং ভ্রমণ করতে পারেন এই সময়টাতে আরো অনেক মনোরম থাকে। 

যার কারণে আপনি ঘুরে অনেক মজা পাবেন পাহাড় জঙ্গল এসব দেখার সুযোগ পাবেন। দার্জিলিংয়ের ৬ মাস সবচেয়ে সুন্দর পরিবেশ থাকে। আর এই ছয় মাস হল দার্জিলিংয়ের ভ্রমণের পারফেক্ট সময়। 

দার্জিলিং ভ্রমন টিপস 

আপনারা যদি কম খরচে দার্জিলিং ভ্রমণ করতে চান তাহলে আপনাকে দার্জিলিং ভ্রমন টিপস মেনে চলতে হবে। 

দার্জিলিং ভ্রমন টিপস হচ্ছে--
  • বর্ষার সময় দার্জিলিং না যাওয়ায় ভালো । কারণ বর্ষার সময় দার্জিলিংয়ের পাহাড় ধস হয় । 
  • পাহাড়ের উপরে যাওয়ার সময় ভাল মানের স্লিপার বা স্যান্ডেল পরবেন । উঁচু মানের হিল পরিহার করুন। 
  • দার্জিলিং এ বড় বড় দোকান থেকে শপিং করবেন এতে আপনি দামে কম পা্বেন। এবং ভালো ও উন্নতমানের যিনিস পাবেন। ছোট দোকান থেকে শপিং করলে আপনার ঠকার সম্ভাবনা থাকবে এবং দামেও বেশি নিবে তারা। এজন্য চেষ্টা করবেন সবসময় বড় বড় শপিং মল  বা সুপার শপ  থেকে শপিং করার। 
  • দার্জিলিং হোটেল বুক করার আগে অবশ্যই একটি বিষয়ে জেনে নিতে হবে আর তা হলো হোটেলে গরম পানি আর  রুম মিটারের ব্যবস্থা আছে কিনা তারপর হোটেল বুকিং করুন কা্রন দার্জিলিং এ অনেক ঠান্ডা পড়ে। 
  • আপনি যদি সিজনে দার্জিলিং এ ঘুরতে যান তাহলে অবশ্যই আগে থেকেই হোটেল বুকিং করে যাবেন। তা না হলে আপনি সেখানে গিয়ে রুম পাবেন না। কারণ সেখানে অনেক পর্যাটক পিক সিজনে ঘুরতে আসে তাই রু্ম খালি পাওয়া যায় না। 
  • হিমালায়ান পার্কে ঘুরতে গেলে অবশ্যই আপনাকে সেখানে গিয়ে কোনো কিছু অপরিস্কার করা যাবে না। সেই পার্ক একটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পার্ক। আর সেখানকার প্রাণীদের কোনোভাবেই বিরক্ত করা যাবে না। 
  • দার্জিলিং এ রক গার্ডেন থেকে খাবারের হোটেলগুলোর দূরত্ব অনেক। তাই সেখানে ঘুরতে গেলে আপনি খাবার সাথে করে নিয়ে যাবেন । তা না হলে বিপদে পড়তে পারেন। 
  • টাঁকাকে রূপিতে রূপান্তর করে নিন । 

লেখকের শেষকথাঃ কম খরচে দার্জিলিং ভ্রমণ 


আজকের এই পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি কম খরচে দার্জিলিং ভ্রমণ  সম্পর্কে। এবং দার্জিলিং ভ্রমনে গিয়ে কোথায় কোথায় ঘুরবেন কীভাবে বাংলাদেশ থেকে দার্জিলিং যাবেন বিস্তারিত সব কিছু। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইউনিকমিস্ট্রির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন আমরা আপনাদের পজিটিভ কমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছি

comment url