নিচু জমিতে কলা চাষ করার সহজ উপায়
নিচু জমিতে কলা চাষ করার সিধান্ত একটা লাভজনক উদ্যোগ। কলা একটি উপকারী এবং লাভজনক ফসল। কলা এমন একটা ফসল যা সহজে চাষ করা যায়। এবং কলার চাহিদা দেশে বিদেশে অনেক বেশী এবং কলা একটি খুবই উপকারী একটা ফল।তো চলুন জেনে নেওয়া যাক নিচু জমিতে কলা চাষ করার পদ্ধতি।
দেশে বিদেশে এখন কলার চাহিদা প্রচুর। এবং কলা চাষে খরচা অনেক কম হয় এবং লাভ হয় অনেক বেশী পরিমাণে। কলার চাহিদা অনেক বেশী এবং উৎপাদন খরচ অনেক কম হওয়ার কারণে অনেকেই কলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। আজকের এই পোস্ট টির মাধ্যমে আমরা আপনাদের জানাবো কীভাবে কম খরচে অধিক কলা উৎপাদন করবেন ।
পেইজ সুচিপত্র ঃ নিচু জমিতে কলা চাষ
- নিচু জমিতে কলা চাষ
- কলার জাত নির্বাচন
- কলা চাষের জন্য মাটি নির্বাচন
- কীভাবে কলার চারা রোপণ করবেন
- কলার পরিচর্যা কিভাবে করবেন
- কলার ফসল সংগ্রহ
- লাভজনক ফসল কলা
- কলা গাছকে রোগবালাই থেকে কীভাবে রক্ষা করবেন
- কলা গাছকে পোকামাকড় থেকে রক্ষা
- কলা গাছের গোড়া ফাটা রোগ
- সবরি কলা চাষ পদ্ধতি
- কলার বিটল পোকা দমনের উপায়
- সবরি কলা চেনার উপায়
- কলা চাষের উপযুক্ত সময়
- কলার সিগাটোকা রোগ
- কলা গাছের পাতা পোড়া রোগ কেন হয় এবং প্রতিরোধ করার উপায়
- কলা বাগানে সার দেওয়ার নিয়ম
- কলা উৎপাদনে শীর্ষ জেলা কোনটি
- কলার চারা কোথায় পাওয়া যায়
- লেখকের শেষকথাঃ নিচু জমিতে কলা চাষ
নিচু জমিতে কলা চাষ
আপনারা অনেকেই জানেন না কীভাবে নিচু জমিতে কলা চাষ করা যায়। আজকের এই
পোস্ট আমরা নিচু জমিতে কলা চাষ করার উপায় সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। আপনারা
যদি এই পোস্ট ভালভাবে বুঝতে পারেন তাহলে খুব সহজেই নিচু জমিতে কলা চাষ
করতে পারবেন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক নিচু জমিতে কলা চাষ করার
উপায়।
কলার জাত নির্বাচন
যেকোনো ফসল উৎপাদনে জাত নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমাদের দেশে
প্রায় 40 থেকে 50 টি যাদের কলা চাষে থাকে। এসব কলার জাত গুলোর মধ্যে সবরি ,কবরি,
কলা চাপা সিঙ্গাপুরি কাবুলী, অমৃতসাগর ইত্যাদি জাতের কলা উল্লেখযোগ্য।
এছাড়াও বারিকলা-১, বারিকলা-২ ও বারিকলা-৩ নামের জাত উদ্ভাবন করেছেন
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট।
বারিকলা-১ এই জাতের কলার ফলন হয় অনেক বেশি এবং এই জাতের কলা খেতে অনেক
মিষ্টি হয় এবং দেখতে হয় অনেক হলুদ। আর বারিকলা-২ এই জাতের কলাকে কাচা কলা
হিসাবে ব্যবহার করা হয় । এই বারিকলা-২ এর ফলন হয় বারিকলা-১ জাতের কলা
থেকে কিছুটা কম । আর বারিকলা-৩ এই জাতের কলা হয় সম্পূর্ণ পাকা।
এবং বারিকলা-৩ এইম কলার কোনো বীজ থাকে না ।
এর ফলন তেমন বেশী হয় না । আর এই
কলা খেতে অনেক বৃষ্টি এবং আঠালো
কলা চাষের জন্য মাটি নির্বাচন
কলা চাষের জন্য মাটি নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা মাটি নির্বাচন
সঠিক না হলে ফলন তেমন ভালো হবে না। সব ধরনের মাটিতেই প্রায় কলা চাষ করা
যায় কিন্তু যেসব মাটিতে রস আছে প্রচুর সেসব মাটিতে কলার ফলন অনেক ভালো
হয়। এছাড়া আপনি চাইলে দো আশ ও বেলে দো আশ মাটিতে কলা চাষ
করতে পারবেন।
আপনারা চাইলে নিচু জমিতেও কলা চাষ করতে পারবেন। কিন্তু জমিতে পর্যাপ্ত
পরিমাণ আলো বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে। যেসব জায়গার জলবায়ু
আর্দ্রতাযুক্ত সেসব জায়গায় কলা চাষ অনেকভালো হয়। এবং শীতকালে কলা গাছের
বৃদ্ধি হয় অনেক ভালো । আবার কলার চারা দুই রকমের হয়ে থাকে। একটা হল
আসি ছাড়া এবং অন্যটি হচ্ছে পানি চারা
কীভাবে কলার চারা রোপণ করবেন
কলার চারা যেকোন মাসে রোপন করা যায় শুধু ভাদ্র মাস ছাড়া
।তবে মধ্য আশ্বিন থেকে মধ্য অগ্রহায়ণ এবং মধ্য মাঘ থেকে মধ্য
চৈত্র কলার চারা রোপনের জন্য উপযুক্ত সময়। এজন্য আসি চারা নির্বাচন
করতে হবে এবং ওই চারার বয়স হতে হবে তিন মাস এবং চারাটি হতে
হবে সুস্থ সবল। আপনি যখন চারা রোপন করবেন তার আগে জমি ভালোভাবে গভীর করে
নিতে হবে।
তারপর দুই তিন বার চাষ করতে হবে চাষ করা শেষ হলে এদের জৈব সার ছিটিয়ে দিতে
হবে। এভাবে সার দেয়া অবস্থায় জমি তিন চার দিন ফেলে রাখতে হবে। তারপর
আপনাকে ২ মিটার করে দূরত্ব রেখে ৬৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য প্রস্থ ও গভীর
করে গর্ত তৈরি করতে হবে। তারপর প্রতিটি গর্তে ঘুবর টিএসপি বা ইউরিয়া
সার ছিটিয়ে দিয়ে গর্ত ভরাট করতে হবে।
গোড়ার কাটা অংশটি দক্ষিণ দিকে রেখে চারা রোপণ করার চেষ্টা করবেন কলার চারা
রোপণের ক্ষেত্রে। কলার চারা দক্ষিণ দিকে আপণি যদি রোপণ করেন তাহলে কলার
কাদি বা থোরা উত্তর দিকে পড়বে তার ফলে কলার রং হবে অনেক সুন্দর ও উজ্জ্বল এবং
নানারকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাবে আপনার বাগান
কলার পরিচর্যা কিভাবে করবেন
আপনি যদি ভালো ফলন পেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে। তা না
হলে আপনি ভালো ফলন কখনোই পাবেন না। কলা চাষে তেমন কোন পরিশ্রমের দরকার
হয় না বললেই চলে। কিন্তু আপনি যখন চারা রোপন করবেন তারপর আপনাকে অবশ্যই ভালো
ভাবে সেগুলোর পরিচর্যা করতে হবে।
আপনি যদি শুষ্ক মৌসুমে কলা চাষ করে থাকেন তাহলে আপনাকে ১৪ থেকে ২০ দিন পর পর সেচ
দিতে হবে। আর যদি আপনি কলার চারা বর্ষাকালে রোপন করেন তাহলে আপনাকে
পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রচুর পানির প্রয়োজন হয় কলাগাছের
। কিন্তু কলাগাছ অতিরিক্ত পানি সহ্য করতে পারে না। তাই আপনাকে অবশ্যই
পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবস্থা করতে হবে।
কলার চাড়া রোপনের প্রথম চার মাস আপনাকে অবশ্যই কলাবাগান আগাছা মুক্ত রাখতে
হবে।যেগুলো পাতা পূরোনো হয়ে যাবে সেই পাতাগুলো কেটে পরিষ্কার করতে হবে। আবার যখন
কলা গাছে থোর আসবে সে সময় যদি নতুন চারা গজায় তাহলে নতুন চারাগুলো উপড়ে
ফেলতে হবে। কলার থোর আসার পর বাতাসে যদি কলা গাছ ভেঙে না যায়।
এজন্য বাতাসের বিপরীত দিক দিয়ে বাঁশের খুঁটি দিতে হবে যাতে গাছগুলো ভেঙে
যেতে না পারে। আর যখন থোর থেকে কলা বাড়ানোর সময় হয়ে যাবে তখন পুরো থোর সবুজ
পলিব্যাগ দিয়ে ঢেকে দেয়ার চেষ্টা করবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই পলিব্যাগ এর
নিচের দিক একটু খোলা রাখতে হবে এ সময় যদি প্রয়োজন পড়ে তাহলে কীটনাশক বা
ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে পারবেন।
আর যদি কোন প্রকার সমস্যা হয় তাহলে আপনার স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তরে পরামর্শ নিতে
পারেন। আপনি যখন প্রথম চারা রোপন করবেন তখন চার থেকে পাঁচ মাস আপনাকে
কলাবাগান পুরা ফাঁকা রাখতে হবে তখন কলা বাগানে কোন ফসল চাষ করা যাবে
না। তারপর চার থেকে পাঁচ মাস পর আপনি আপনার বাগানে সবজি চাষ করতে
পারেন।
এই কলার বাগানে আপনি কুমরা, মিষ্টি কুমড়া,শশা, নানারকম শাক সবজি চাষ করতে
পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করতে হবে তা না হলে
ফলন ভালো হবে না। আর আপনার বাগান টি যদি নিচু জমিতে হয় তাহলে আপনাকে অবশ্যই পানি
নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
কলার ফসল সংগ্রহ
কলার চারা রোপনের ১২ থেকে ১৫ মাসের মধ্যেই প্রায় সব ধরনের কলা পরিপক্ক হয়ে
ওঠে।কলা পাকার পর গাছ থেকে তা নামানোর সময় অবশ্যই সাবধানে নামাতে
হবে। নামানোর পর কলার থোর ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে। পরিষ্কার করা শেষ হলে
চটের বস্তা বিছিয়ে চটের বস্তার উপর রেখে দিতে হবে।
গাছ থেকে কলা নামানোর পর গাছের মাঝ বরাবর কেটে ফেলতে হবে। ফলে মাঝখান থেকে
আবার নতুন চারা গজাবে । কল একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অর্থকরী ফসল। কলাতে রয়েছে
অসংখ্য পুষ্টিগুণ এবং অন্যান্য ফলের তুলনায় কলা অনেক সস্তা এবং বছরের
প্রায় সময়ই কলা হাতের নাগালে পাওয়া যায়।
তাই যারা কলা চাষ করছেন কলা চাষের প্রতি যাদের আগ্রহ রয়েছে তারা কলা চাষ
করে তাদের ভাগ্য ফিরিয়েছেন। কলা চাষ করি অনেকেই আর্থিকভাবে অনেক লাভবান
হয়েছেন । যার ফলে কলা কে অর্থকরী ফসল হিসেবে বিবেচিত করা হয়। কলা চাষে
পরিশ্রম অনেক কম এবং উৎপাদন খরচও খুব কম হয়ে থাকে তাই কলা চাষ করে অনেকেই
স্বাবলম্বি হয়েছেন।
কলা এমন একটি ফসল যা কাঁচাও খাওয়া যায় আবার পাকাও খাওয়া
যায়। কলাপাতা কে অনেকেই থালার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। এই
কলা দিয়া আবার নানারকম তরকারি রান্না করা যায়। কলা চাষের সবচেয়ে বড় সুবিধা
হচ্ছে এটা যে কোন মাটিতেই চাষ করা যায় এবং যেকোন মৌসুমেই কলা চাষ করা যায়।
এমনকি যদি আপনি আপনার পরিত্যক্ত জমিতে কলা চাষ করেন তাহলে আপনিও কলা চাষ করে
লাভবান হতে পারবেন। এমনকি কলার চাহিদা দেশে পূরণ করে বিদেশে কলা রপ্তানি করে
প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। এখন কলা চাষে লাভবান হচ্ছে সবাই
তাই তরুণেরা কলা চাষের দিকে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করছে।
বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই কলা চাষ করা হয় তবে পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে কলা
একটু বেশি হয় যেমন সিলেট খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে কলা চাষ অনেক বেশি হয়ে থাকে।
এছাড়াও নরসিংদী রংপুর বগুড়া নাটোর জয়পুরহাট মুন্সিগঞ্জ কলা চাষের জন্য অনেক
বিখ্যাত
লাভজনক ফসল কলা
কল একটা লাভ জনক ফসল। এটা উৎপাদনে তেমন কোন খরচ হয় না এবং উৎপাদন খরচ খুব
কম। এবং কলার চাহিদা দেশে-বিদেশে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে । এবং কলা চাষে তেমন
কোনো পরিশ্রমের দরকার হয় না অন্যান্য ফসল উৎপাদনে যতটা পরিশ্রম করতে
হয়। বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেক জেলায় অনেক বেশি পরিমাণে কলা উৎপাদন করা
হয়।
কলা চাষ করে অনেকেই দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে কলা রপ্তানি করছে যার ফলে
প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। কলা একটি লাভজনক ফসল হওয়ার
কারণে অনেকে এখন কলা চাষের দিকে আগ্রহ প্রকাশ করছে। প্রাচীনকাল থেকেই কলার
চাহিদা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বাংলাদেশ সহ অন্যান্য দেশে প্রধান ফল হিসেবে কলাকে
বিবেচনা করা হয়
কলা গাছকে রোগবালাই থেকে কীভাবে রক্ষা করবেন
ভালো পরিমানে কলা উৎপাদন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই কলাগাছকে রোগবালাই এর হাত থেকে
রক্ষা করতে হবে।
পানামা ঃ পানামা হচ্ছে কলার সবচেয়ে ক্ষতিকর একটা রোগ। এই রোগ
সবচেয়ে বেশি দেখা যায় সবরি জাতের কলায়। এই রোগটা হয়ে থাকে
ফিউজেরিয়াম নামের ছত্রাকের কারণে। এই রোগ দেখা দিলে গাছের নিচের পাতার
রং হলুদ বর্ণ ধারণ করে। এই হলুদ রং ধীরে ধীরে মধ্যশিরার দিকে অগ্রসর হয় ও
গাঢ় বাদামী রং ধারণ করে।
এই পানামা রোগে অধিক হারে গাছ আক্রান্ত হলে পত্রফলক ভেঙ্গে ঝুলে পরে। ফলে
গাছটি শুধু স্তম্বের মতো দাঁড়িয়ে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় কান্ডের গোড়া
লম্বাভাবে ফেটে যায়। এ পোকাটি যদি কান্ড ও শিকড় কেটে ফেলে তাহলে
নালির মধ্যে লালচে কালো রঙের দেখা পাওয়া যায় ।
সিগাটোকা ঃ সিগাটোকা রোগের লক্ষণ হচ্ছে কাছের তৃতীয় বা চতুর্থ
পাতাটিতে ছোট হলুদ দাগ দেখা যায়। পরে আস্তে আস্তে দাগটি ঘন হতে থাকে। এই রোগ
বেশি দেখা দিলে হলুদ থেকে বাদামী রং ধারণ করে। এবং পাতাটিকে পোড়ার মতো দেখা
যায়। এই রোগে আক্রান্ত হলে গাছের ফলন অনেক কমে যায় ।
হার্ট রট ঃ এই রোগ হলে গাছের পাতা কালো হয়ে যায় এবং কালো
হওয়ার পর তা পচে যায়। এই রোগটি সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়ে
থাকে।
বানচি টপ ঃ এ রোগটি কলা গাছের জন্য খুবই ভয়াবহ একটা রোগ । এই
রোগ সাধারণত ভাইরাসজনিত কারণে হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত হলে গাছের পাতা সরু ও
খাটো হয়ে যায় এবং উপরের দিকে খাড়া থাকে। এ রোগে আক্রান্ত হলে একটি পাতা বের
হয়ে বড় হওয়ার আগেই আরেকটি পাতা বের হয় কিন্তু পাতার বৃদ্ধি হয় না।
এইভাবে অনেক পাতা গুচ্ছাকারে দেখা যায় । এই রোগটি যদি গাছ ছোট থাকা অবস্থায় হয়
তাহলে গাছে মোচা আসার সম্ভাবনা কমে যায়। এবং উৎপাদন অনেক কম হয়ে থাকে এই রোগে
আক্রান্ত হলে ।
নোমোটেড ঃ নোমোটেড নামের রোগ সাধারণ্ত কৃমির কারণে হয়ে থাকে
।কোন গাছ কৃমিতে আক্রান্ত হলে অতি সহজে ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া গাছের ভিতরে প্রবেশ
করতে পারে । ফলে গাছের শিকড়টি কালো হয়ে পচে যায় । যার ফলে গাছটি মাটি থেকে খাদ্য
সংগ্রহ করতে পারে না
এবং গাছটি অপুষ্টিতে ভুগতে শুরু করে যার ফলে কলার ফলন কমে যায় । এবং গাছের
শিকড় গুলো সম্পন্ন নষ্ট হওয়ার কারণে গাছটি খুব অল্প বাতাসে হেলে পড়ে যায় ।
দমন বাবস্থা ঃ কলাগাছকে রক্ষার জন্য যেসব গাছ যেসব রোগে আক্রান্ত হয়েছে
সেসব গাছ শিকড় সহ জমি থেকে চারা তুলে জমি থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে । এসব
রোগ থেকে বাঁচতে হলে রোগ প্রতিরোধী গাছ লাগাতে হবে । এছাড়াও আপনি
যদি তিন মাস কোনো জমি পানিতে ডুবিয়ে রাখেন তাহলে জমির রোগ মুক্ত করা
সম্ভব ।
আপনার জমি যদি এসব পোকামাকড় আক্রান্ত হয় তাহলে এক দু'বছর কলার চাষ না
করাই ভালো ।এবং গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে একটি বিষয়ে খেয়াল রাখতে
হবে গাছগুলো সঠিক দূরত্বে লাগাতে হবে যাতে বাগানের ভিতর
পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে । এছাড়াও আপনি আপনার স্থানীয়
কৃষি অধিদপ্তরে পরামর্শ নিয়ে যেসব ওষুধ স্প্রে করতে বলে সেসব ওষুধ
স্প্রে করতে পারেন । এভাবে আপনি রোগগুলো থেকে মুক্তি পেতে পারেন ।
কলা গাছকে পোকামাকড় থেকে রক্ষা
আজকে পোকামাকড় হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কাছের মোচা বের হওয়ার
পরে একবার সরি থেকে প্রথম যখন কলা বেরোবে তখন একবার ও সম্পূর্ণ কলা
বের হওয়ার পর আরো একবার মোট তিনবার কীটনাশক ওষুধ স্প্রে করতে হবে ।
বিটল ঃ বিটল খুবই মারাত্মক একটি পোকা । এ পোকা কচি পাতা ও কচি
কলার সবুজ অংশ সম্পুন্ন খেয়ে ফেলে এবং পাতাতে দাগ সৃষ্টি করে । কলা যখন ধীরে
ধীরে বড় হয় তখন দাগগুলো বড় আকারের হতে থাকে । ফলে কলাগুলো কালচে বাদামী রং ধারণ
করে । যার ফলে কলা গুলো দেখতে তেমন আকর্ষণীয় হয় না এবং রং হয় কালচে বাদামি রঙের
যার ফলে সম্পূর্ণ দাম পাওয়া যায় না বাজারে ।
কলা গাছের গোড়া ফাটা রোগ
কলা গাছের গোড়া ফাটা রোগ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এই সমস্যা দেখা দিতে
পারে মাটির আদ্রতা অতিরিক্ত হয়ে গেলে, পুষ্টির অভাব দেখা
দিলে, ড্রেনের ব্যবস্থা না থাকলে, এবং কাছের
গোড়ায় পোকামাকড় আক্রমণ করলে কলা গাছের গোড়া ফাটা রোগ দেখা দিতে
পারে। এসব সমস্যার কারণে এ রোগ দেখা দিতে পারে এবং গাছ দুর্বল হয়ে
যায়।
গোড়া ফাটা রোগ হওয়ার কারণ :
- অতিরিক্ত পানি জমা: জমিতে পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকার কারণে অতিরিক্ত পানি জমার ফলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- পুষ্টির অভাব: গাছে পুষ্টির অভাব দেখা দিলে গোড়া ফাটা রোগ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। বিশেষ করে ক্যালসিয়ামের অভাবের ফলে গাছের এই রোগ হতে পারে।
- মাটির অম্লতা: মাটির অম্লতা কমে যাওয়ার ফলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাটির পি এই চ এর মাত্রা কমে যাওয়ার ফলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- পোকামাকড়: অনেক পোকামাকড়ের আক্রমণ করার ফলে গাছের এ সমস্যা দেখা যায়। বিশেষ করেরুট নেমাটোড পোকার আক্রমণে এ সমস্যা বেশি হয়ে থাকে।
- আবহাওয়া এবং তাপমাত্রা: গাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত পানি না থাকলে মাটির অত্যাধিক শুষ্ক হয়ে গেলে এ সমস্যা হতে পারে।
প্রতিকার ও প্রতিরোধ:
- ড্রেনের ব্যবস্থা :আপনার জমিতে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ব্যবস্থা করতে হবে। জমিতে কোনভাবেই অতিরিক্ত পানি দেয়া যাবে না।
- পুষ্টির সঠিক মাত্রা নিশ্চিত করা: জমিতে পুষ্টির অভাব দেখা দিলে জমিতে সঠিক মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
- পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ: জমিতে পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সার প্রয়োগ করতে হবে।
- সঠিক পরিমাণে পানি দেওয়া: জমিতে সঠিক পরিমাণে পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে। পানি অতিরিক্ত হওয়া চলবে না অথবা পানি কম হলেও চলবে না। সঠিক পরিমাণে পানি ব্যবস্থা রাখতে হবে।
- রোগ প্রতিরোধী জাত নির্বাচন: আপনাকে চাষ করার জন্য এমন কিছু রোগ প্রতিরোধের জাত নির্বাচন করতে হবে যার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি।
আপনারা যদি রোগ প্রতিরোধ করার জন্য এ ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করতে পারেন তাহলে
এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
সবরি কলা চাষ পদ্ধতি
সবরি কলা চাষ পদ্ধতি অনেক সহজ এবং এই কলা চাষ করার মাধ্যমে অধিক ফলন পাওয়া
সম্ভব। তবে এই কলা চাষ করার জন্য কিছু নিয়ম বা পদ্ধতি মেনে চলতে
হবে। নিচে সবরি কলা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা
হলো।
এ কলা চাষ করার জন্য প্রয়োজন হবে উর্বর দো-আশ বা
বেলে-দোআশ মাটি। এসব মাটিতে এই কলা উৎপাদন ভালো হয়। এবং এই
কলা চাষের জন্য গরমের মৌসুম অত্যন্ত উপযোগী। শীতল মৌসুমে এ কলার
উৎপাদন অনেক কম হয়ে যায়। এ কলা চাষের জন্য জমি ভালোভাবে প্রস্তুত
করতে হবে। জমিতে কোন প্রকার আগাছা থাকা চলবে না।
এবং জমিতে চাষের আগে জৈব সার প্রয়োগ করা উচিত। এতে মাটির উর্বরতা
অনেক বৃদ্ধি পাবে এবং ফলন বেশি হবে। তারপর জমি সমান করতে হবে এবং
পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এ কলা চাষের জন্য উপযুক্ত
সময় হচ্ছে মার্চ-এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস। এবং কলার
চারা ৬x৬ ফুট দূরত্বে রোপন করা উচিত।
চারা রোপণের জন্য ১.৫ ফুট গভীর এবং ১.৫ ফুট প্রশস্ত করে
গর্ত তৈরি করতে হবে। এবং প্রতিটি গর্তে আপনাকে জৈব সার প্রয়োগ করতে
হবে। এবং চারা রোপনের পর কলা গাছে নিয়মিত সেচ প্রধান করতে
হবে। জমিতে কোনভাবেই আদ্রতা তৈরি হতে দেয়া যাবে না। এবং জমিতে
কখনো অতিরিক্ত পানি জমতে দেয়া যাবে না।
জমিতে চারা রোপনের ৩০ থেকে ৪০ দিন পর জমিতে ইউরিয়া, টিএসপি
সার দিতে হবে। এবং জমিতে প্রতি তিন মাস পর পর কীটনাশকের ব্যবস্থা করতে
হবে। গাছকে সুস্থ রাখার জন্য জমিতে সার প্রয়োগ করা জরুরি। জমিতে
নিয়মিত অগাছা পরিষ্কার করতে হবে। এবং জমিতে কোন রোগ দেখা দিলে
জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
চারা রোপনের 10 থেকে 12 মাসের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করতে পারবেন। ফলের
চামড়া হালকা হলুদ রঙের হওয়া শুরু করলে ফসল সংগ্রহ করার সময় হয়ে
যাবে। এবং ফসল সংগ্রহ করার পর গাছটি কেটে ফেলা উচিত। আশা করি
কিভাবে কলা চাষ করবেন তা বুঝতে পেরেছেন।
কলার বিটল পোকা দমনের উপায়
কলার বিটল পোকা দমনের উপায়, কলার বিটল পোকা ফসলের জন্য অত্যন্ত
ক্ষতিকর। যা গাছের ভিতর প্রবেশ করে বিভিন্ন খাদ্য গ্রহণ করে এবং গাছকে
এবং গাছের কাঠামো অনেক দুর্বল করে ফেলে। বিটল পোকা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ
করবেন নিচে আলোচনা করা হলো।
এ পোকা, যে গাছে আক্রমণ করেছে আক্রান্ত গাছ টিকে সরিয়ে ফেলতে
হবে। এবং গাছের বর্জ্য সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। এবং আপনার
যদি মাটি উল্টে দিতে পারেন তাহলে এ পোকার ডিম নষ্ট হয়ে যাবে। এছাড়াও
আপনারা এই রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য পোকা ধরার ফাঁদ ব্যবহার করতে
পারেন। এছাড় াও বিভিন্ন ছত্রাক ব্যবহারের মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা
সম্ভব।
তাছাড়া আপনারা যদি গাছের গোড়ায় ক্লোরপাইরিফস, এবং কার্বারিল
কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন তাহলে খুব সহজেই বিটল পোকা থেকে আপনার গাছকে
রক্ষা করতে পারবেন। এবং একই জমিতে বারবার একই ফসল চাষ করা থেকে
বিরত থাকুন এতে পোকামাকড় আক্রমণ অনেক বেশি থাকে। এছাড়া বিকল পোকার হাত
থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য
রোগ প্রতিরোধকারী চারা ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া
সঠিক পরিমানে জমিতে ছেচের ব্যবস্থা করতে হবে। এ পদ্ধতি গুলো
ব্যবহার করে খুব সহজেই আপনারা বিটল পোকা থেকে আপনার কলা গাছকে রক্ষা করতে
পারবেন।
সবরি কলা চেনার উপায়
সবরি কলা চেনার উপায় বিভিন্ন উপায় রয়েছে। এই কলা সাধারণত
মাঝারি আকারের হয়ে থাকে এবং আকৃতি কিছুটা বাঁকা হয়ে থাকে। এ ফল পাকা
অবস্থায় হালকা হলুদ রঙের হয় এবং তাতে হালকা কালচে রং থাকে। এই
কলা পাকলে খেতে অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে। এই কলার খোসা তুলনামূলক মোটা
হয়ে থাকে। এবং পাকা অবস্থায় এটা খেতে অনেক সুস্বাদু এবং মিষ্টি হয়ে
থাকে।
উপরে দেখানো বৈশিষ্ট্যগুলো র মাধ্যমে আপনারা খুব সহজে সবরি কলা চিনতে
পারবেন।
কলা চাষের উপযুক্ত সময়
কলা চাষের উপযুক্ত সময়
কলা চাষের উপযুক্ত সময় নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপরে। তবে কলার ফলন
বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত সময় কলা চাষ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কলা চাষের
উপযুক্ত সময় নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো;
কলা চাষের জন্য আদর্শ সময় হচ্ছে মার্চ থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত। এ
সময় আবহাওয়া উষ্ণ থাকার ফলে গাছের বৃদ্ধি অনেক দ্রুত হয় এবং বর্ষাকালে
পানি হওয়ার ফলে সেচ দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এছাড়াও সেপ্টেম্বর থেকে
অক্টোবর মাস পর্যন্ত কলার চারা রোপন করা যায়। কারণ এ সময় মাটিতে
পর্যাপ্ত পরিমাণ আদ্রতা থাকে।
কলাগাছ সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায় গ্রীষ্মকালে। গরমের সময় কলা গাছের
বৃদ্ধি খুব দ্রুত ঘটে এবং কলা গাছ এর জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা হচ্ছে ২৫ থেকে
৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। শীতের সময় কলা গাছের বৃদ্ধি খুব কম হয়ে
থাকে। এজন্য শীতের মৌসুমে কলা চাষ থেকে বিরত থাকতে হবে। এবং যেখানে
বৃষ্টিপাত খুব কম হয় সেখানে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়াও কিছু কিছু জাত রয়েছে যেগুলো বর্ষার সময় ভালো বৃদ্ধি পায় এবং
কিছু জাত বর্ষার পরে ভালো ফলন দিয়ে থাকে। এই সময় সীমা মেনে চললে
অনেক বেশি ফলন উৎপাদন করা সম্ভব।
কলার সিগাটোকা রোগ
কলার সিগাটোকা রোগ একটি মারাত্মক রোগ। এই রোগ হওয়ার ফলে কলা
গাছের পাতা মরে যেতে শুরু করে এবং ফলন অনেক কমে যায়। এ এ রোগ
ছত্রাক জনিত কারণে হয়ে থাকে। এবং গরমকালে এ রোগের প্রভাব অনেক বৃদ্ধি
পেয়ে থাকে।
সিগাটোকা রোগ এর লক্ষন
- গাছের পাতায় হলুদ অথবা বাদামি রং হতে শুরু করে
- কিছু দিন পরে পাতাগুলো মরে যেতে শুরু করে
- গাছের পাতা মরে যেতে শুরু করে এবং ফলন অনেক কমে যায়
- রোগ আক্রমণের ফলে ফলন অনেক কমে যায়
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ:
- অক্রান্ত পাতা সরিয়ে ফেলতে হবে
- চাষের এলাকা সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে
- বিভিন্ন ছত্রাকনাশক ব্যবহার করলে এ পোকা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব
- কীটনাশক ব্যবহারের সময় পাতার নিচেও স্প্রে করা উচিত
- অতিরিক্ত পানি জমতে দেওয়া যাবে না
- বাগানে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে
- রোগ প্রতিরোধে জাত নির্বাচন করতে হবে
এসব মাধ্যম ব্যবহার করে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
কলা গাছের পাতা পোড়া রোগ কেন হয় এবং প্রতিরোধ করার উপায়
কলা গাছের পাতা পোড়া রোগ কেন হয় এবং প্রতিরোধ করার উপায় জানেন কি।
এই এই রোগ বিভিন্ন ছত্রাক জনিত কারণে অথবা পুষ্টির অভাবে হতে
পারে। এটি কলা গাছের জন্য অনেক ক্ষতিকর এবং ফলন অনেক কমে দিতে পারে
এ রোগ। নিচে পাতা পোড়া রোগ হওয়ার কারণ এবং প্রতিকার
সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো;
পাতা পোড়া রোগের কারণ:
পাতা পরা রোগ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। বিভিন্ন ছত্রাকের আক্রমণে কিংবা
গাছের পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব থাকলে এসব রোগ দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে
এই রোগ হয়ে থাকে ছত্রাকের আক্রমনের ফলে। এছাড়াও বিভিন্ন পুষ্টি
জনিতো কারণে এই রোগ দেখা দিতে পারে। কলা গাছে কেলসিয়াম পটাশিয়াম
এর অভাব দেখা দিলে এ রোগ হতে পারে।
তাছাড়া জমিতে অতিরিক্ত পানি জমে থাকলে পাতা পড়া রোগ হতে পারে। এজন্য
পর্যাপ্ত সেচ এর ব্যবস্থা রাখা উচিত। তাছাড়া অতিরিক্ত গরমের
কারণেও এই রোগ হতে পারে। তাছাড়া এমন কিছু পোকা রয়েছে যেগুলো
আক্রমণ করলে পাতা পুড়ে যেতে শুরু করে।
প্রতিরোধের উপায়
- সঠিক সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে
- মাটির পরীক্ষা করে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে
- রোগ প্রতিরোধী জাত নির্বাচন করতে হবে
- গাছের চারপাশ সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে
- ছত্রাক কে মেরে ফেলার জন্য স্প্রে করতে হবে
- পর্যাপ্ত কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে
এই উপায় গুলো মেনে চললে পাতা পোড়া রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এবং ফলন
অনেক বৃদ্ধি করা সম্ভব।
কলা বাগানে সার দেওয়ার নিয়ম
কলা বাগানে সার দেওয়ার নিয়ম, কলার উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য বাগানে
সার দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনি যদি না জানেন কখন
জমিতে সার প্রয়োগ করতে হবে তাহলে আপনার ফলন অনেক কম হবে। এজন্য আপনার
অবশ্যই জানা উচিত যে জমিতে কখন সার প্রয়োগ করলে ফলন অনেক বেশি হবে।
আপনারা যখন চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করবেন তখন প্রতিটি গর্তে ৯-১০ কেজি
গোবর অথবা জৈব সার প্রয়োগ করা উচিত। এতে মাটির উর্বরতা অনেক বৃদ্ধি
পায় এবং ফলন অনেক বেশি হয়ে থাকে। কলার চারা রোপণের ৩০ দিন
পর ১০০-২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০-৬০ গ্রাম টিএসপি
, ১০০-১৫০ গ্রাম এমওপি এবং কিছু জৈব সার ব্যবহার করা উচিত।
চারা রোপনের দুই থেকে তিন মাস পর গাছকে পর্যাপ্ত পুষ্টি দেওয়ার জন্য
২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ৫০ থেকে ১০০ গ্রাম টিএইচপি, এবং
১০০ থেকে ২০০ গ্রাম এমওপি প্রয়োগ করা উচিত। তারপর
চারার রোপনের চার থেকে পাঁচ মাস পর ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম ইউরিয়া
এবং এমওপি ২০০-৩০০ গ্রাম সার প্রয়োগ করা উচিত।
আবার যখন গাছে ফুল আসতে শুরু করে তখন ১০০ থেকে ২০০ গ্রাম ইউরিয়া ২০০ থেকে
৩০০ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করা উচিত। এতে ফলন অনেক বৃদ্ধি পেতে শুরু
করবে। এবং একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে জমিতে সার দেওয়ার পর
পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করতে হবে।
কলা উৎপাদনে শীর্ষ জেলা কোনটি
কলা উৎপাদনে শীর্ষ জেলা হচ্ছে নরসিংদী। এছাড়াও আরো কিছু অঞ্চল রয়েছে
যেগুলোতে অনেক বেশি পরিমাণ কলা উৎপাদন হয়ে থাকে।
এছারাও জামালপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, বরিশাল, ও
চট্টগ্রাম জেলায় অনেক বেশি কলা উৎপাদন হয়ে থাকে।
কলার চারা কোথায় পাওয়া যায়
কলার চারা বিভিন্ন নার্সারি অথবা অনলাইনে মাধ্যমে আপনারা পেতে
পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন কৃষি অফিস কিংবা কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানেও
আপনারা কলার চারা পেয়ে যাবেন।
লেখকের শেষকথাঃ নিচু জমিতে কলা চাষ
প্রিয় পাঠক আজকের পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি কিভাবে নিচু
জমিতে কলা চাষ করা যায় সেই উপায় সম্পর্কে। এছাড়াও আজকের পোস্টে কলা
সম্পর্কিত সকল প্রশ্নের সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করেছি। পোস্টটি যদি
আপনাদের ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করুন ধন্যবাদ,।
ইউনিকমিস্ট্রির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন আমরা আপনাদের পজিটিভ কমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছি
comment url