নামাজের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধির ১০টি কার্যকরী কৌশল

নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায় জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনি একদম সঠিক স্থানে এসেছেন। আমরা নামাজে দারালেই আমাদের মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায়। শয়তান আমাদের নানাভাবে ধোকা দেওয়ার চেষ্টা করেন সবসময়। আজকের এই পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায় সম্পর্কে। 

নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায়
বিশেষ করে নামাজের সময় আমাদের মনে সারা দুনিয়ার চিন্তাভাবনা এসে জড়ো হয়। এজন্য নামাজে মনোযোগী হওয়ার কিছু উপায় রয়েছে। আমরা যদি নামাজে সঠিকভাবে মনোযোগী না হতে পারি তাহলে নামাজ কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। তো চলুন জেনে আসি নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায় সম্পর্কে। 

পেইজ সূচীপত্র ঃ নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায়

নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায়

নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। আজকের এই পোস্টে আমরা এমন কিছু উপায় সম্পর্কে জানাবো যে উপায়গুলো অবলম্বন করলে আপনার নামাজে আর কোনো আজেবাজে চিন্তাভাবনা আসবে না। আপনি খুব মনোযোগ সহকারে নামাজ কায়েম করতে পারবেন। নামাজ আমাদের মুসলিমদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা ইবাদত।

এবং নামাজ হল জান্নাতের চাবি। এজন্য আমরা নামাজে যদি মনোযোগী হতে না পারি তাহলে নামাজ কবুল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এজন্য আমরা সবসময় চেষ্টা করে থাকি নামাজে মনোযোগী হওয়ার জন্য। কিন্তু শয়তানের ধোঁকার কারণে আমরা নামাজে মনোযোগী হতে পারি না। এজন্য আমাদের নামাজে মনোযোগী হওয়ার জন্য নিচের উপায় মেনে চলতে হবে। 

একাগ্রতা

নামাজে মনোযোগী হওয়ার জন্য আমাদের অজুর প্রথমে ভালো করে নামাজের জন্য নিয়ত করতে হবে যে আপনি একমাত্র আল্লাহকে খুশি করতে নামাজ আদায় করবেন। নামাজ আদায় না করলে আমাদের ইমানি শক্তি নষ্ট হয়ে যাবে। আল্লাহ কে খুশি করতেই আপনি একমাত্র তার ঘরে নামাজ আদায় করেন। আর নামাজে মনোযোগে বিঘ্ন ঘটলে মনে মনে কল্পনা করবেন 

যে আপনি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছেন অথবা আল্লাহ আপনাকে দেখছেন। তাহলেই আপনার নামাজে সম্পূর্ণ মনোযোগ আসবে। এ অনুভূতিতে নামাজ পড়ার ফজিলত বর্ণনা করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও ঘোষণা দেন- যে সুন্দরভাবে অজু করে আল্লাহর নিকট পার্থনা করতে আসে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। 

যথাযথভাবে অজু করা

আপনাকে নামাজে মনোযোগী হতে হলে আপনাকে অবশ্যই ভালো করে অজু করতে হবে। আপনার অজু সঠিক না হলে আপনার নামাজ কবুল হবে না। এর নামাজের আগে ভালো করে অজু করলে আপনার নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে। আর আপনাকে নামাজ পড়তে হলে অবশ্যই ভালো করে অজু সম্পন্ন করতে হবে। 

নামাজ কিংবা কোরআন শরিফ পড়ার আগে আপনাকে অবশ্যই অজু সম্পন্ন করতে হবে তা না হলে নামাজ কবুল তো হবেই না বরং গুনাহ হতে পারে। অজু করার সময় অজুর দোয়া পরলে কিয়ামতের দিন আপনার জন্য জান্নাতের সব দরজা খুলে দেওয়া হবে এবং আপনার যে জান্নাত ইচ্ছা আপনি প্রবেশ করতে পারবেন। অজু করার সময় সবসময় চেষ্টা করবেন অজুর সময় দোয়া টি পড়ার জন্য। 

মেসওয়াক ব্যবহার করা

মেসওয়াক ব্যবহার করা সুন্নত। মেসওয়াক ব্যবহার করলে মুখের বাজে গন্ধ দূর হয় এবং মুখ ফ্রেশ অনুভূত হয়। মেসওয়াক ব্যবহার করলে মুখের রোগ জীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়। যেসব গাছ একটু তেতো সাব্দের হয়ে থাকে সেসব গাছের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করা উচিত। মেসওয়াক করার জন্য সবচেয়ে উওম ডাল হচ্ছে যায়তুনের ডাল। 

আপনারা দিনে যতবার মেস ওয়াক করবেন তত বেশী নেকী লাভ করবেন। এজন্য আমাদের উচিত বেশী করে মেস ওয়াক করা 
নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায়

কখন মেসওয়াক করবেন

মেসওয়াক করা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কেনোনা হাদিসে আমাদের মেসওয়াক করার জন্য বলা হয়েছে। এবং মেসওয়াক করার ফলে আমাদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এবং নিয়মিত মেসওয়াক করার ফলে নামাজে মনোযোগী হওয়া যায়। তো চলুন জেনে নেই কোন কোন সময় আপনারা মেসওয়াক করবেন--
  • নামাজের আগে মেসওয়াক করা
  • ঘুম থেকে ওঠার পর মেসওয়াক করা।
  • কোরআন ও হাদিস তেলাওয়াতের আগে মেসওয়াক করা,
  • ঘরের প্রবেশ করে মেসওয়াক করা।
  • মুখে দুর্গন্ধ ছড়ালে মেসওয়াক করা।
  • জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে মেসওয়াক করা।
  • মানুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের আগে মেওয়াক করা।
  • ক্ষুধা লাগলে মেসওয়াক করা।

মেসওয়াক করার উপকারিতা


  • মেসওয়াক করলে আল্লাহ্‌ খুশি হন
  • মেসওয়াক করে নামাজ আদায় করলে বেশী ছওয়াব পাওয়া যায়
  • নিয়মিত মেসওয়াক করলে অভাব দূর হয়ে যায়
  • মেস ওয়াক করলে উপার্জন বৃদ্ধি করে দেয় আল্লাহ্‌ তায়ালা
  • মেস ওয়াক করলে পাকস্থলী ঠিক থাকে
  • মেসওয়াক করলে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি পায়
  • নিয়মিত মেসওয়াকে স্মরণশক্তি ও জ্ঞান বৃদ্ধি পায়
  • মেস ওয়াক করলে শয়তান অসন্তুষ্ট হয়
এজন্য আমাদের উচিত বেশী বেশী মেসওয়াক করা এবং নামাজে মনোযোগী হওয়ার জন্য মেসওয়াক ব্যবহার করা। মেস ওয়াক ব্যবহার করলে আল্লাহ্‌ তায়ালা খুশি হন। এজন্য মেস ওয়াক করা জরুরী। 

নামাজে বিশুদ্ধ তেলাওয়াত করা

নামাজ কায়েম করার সময় সুরা বিশুদ্ধ করে তেলাওয়াত করলে নামাজে মনোযোগ অনেক বৃদ্ধি পায়। সুরা ভালভাবে তেলাওয়াত করলে নামাজে মনোযোগী হওয়া অনেক সহজ হয়ে যায়। তাই নামাজের সময় সুরা ফাতিহা এবং তার পরে যেকোনো সুরা বিশুদ্ধভাবে তেলাওয়াত করতে হবে। এজন্য আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের বলেছেন তোমরা যখ্ন নামাজ কায়েম করো স্পষ্টভাবে ধীরে ধীরে কোরআন তিলাওয়াত করো। 

এছাড়াও আমরা যদি পবিত্র কোরআন শরিফ ভুল ভাবে পরি তাহলে আমাদের গুনাহ হতে পারে।তাছাড়া আমরা যদি নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধি করতে চাই তাহলে আমাদের সুরা ভালভাবে তেলাওয়াত করতে শিখতে হবে তাহলে নামাজে মনোযোগী হতে পারবো। 

অর্থ বুঝে তেলাওয়াত করা

আপনি যদি সুরা র অর্থ না জানেন তাহলে নামাজে মনোযোগী হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় এজন্য আমাদের অর্থ বুঝে কোরআন তেলাওয়াত করা উচিত। নামাজে যে সুরা গুলো পাঠ করা হয় তার অর্থ যদি আমরা বুঝতে পারি তাহলে নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে। আপনারা যদি কোরআন অর্থ সহ সহিহ ভাবে তেলাওয়াত করতে পারেন তাহলে নামাজে মনযোগী হতে পারবেন। 

কোরআন আল্লাহ্‌ তায়ালা র এক বাণী তিনি আমাদের উপরে কোরআন নাজিল করেছেন যাতে আমরা আল্লাহর হুকুম এবং নবীদের উপদেশ মেনে চলতে পারি । নিয়মিত নামাজ পড়লে আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের জান্নাত দান করবেন। কোরআন এ আল্লাহ্‌ আমাদের এমন কিছু উপদেশ দিয়েছেন যা আমাদের জীবনকে আলোকিত করে দিবেন।

এজন্য আমাদের উচিত ভালভাবে অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াত করা নামাজ কায়েম করা এজন্য আমরা যখন নামাজ কায়েম করবো আমরা যদি অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াত করি তাহলে আমাদের নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে। এজন্য নামাজে মনোযোগী হওয়ার জন্য অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াত করা জরুরী। 

আন্তরিকতার সঙ্গে নামাজ পড়া

আন্তরিকতার সঙ্গে নামাজ পড়লে নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। আমরা যখন নামাজে দাঁড়াবো তখন আমাদের মনে যদি আল্লাহর ভয় থাকে, আল্লাহ্‌ যে আমাদের সবসময় দেখছেন সেই কথা স্মরণ করতে হবে তাহলে আমাদের নামাজে মনোযোগ বেড়ে যাবে। এবং আমাদের নামাজ কায়েম করতে হবে আস্তে ধীরে। কোন তাড়াহুড়া করা যাবে না নামাজ কায়েম করার সময়। 

আমরা যখন নামাজ কায়েম করবো আমরা যদি ধীরে ধীরে সেজদা রুকু দেয় তাহলে নামাজে মনোযোগী হওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন সবচেয়ে নিকৃষ্ট চোর ঐ ব্যক্তি যারা নামাজ চুরি করেন। এজন্য আমাদের নামাজে মনোযোগী হওয়ার জন্য ধীরে সহিহ সুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে। 

আল্লাহকে ভয় করা

আমরা যখন নামাজ আদায় করবো তখন আমাদের মনে আল্লাহর ভয় রাখতে হবে। নামাজ কায়েম করার সময় নামাজকে মনে করতে হবে যেন এইটা আমার শেষ নামাজ। আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নিতে হবে জীবনের সকল প্রকারের গুনাহর। যাতে  আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের জীবনের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেন। 

আমাদের মনে প্রত্যেক সময় আল্লাহর ভয় থাকা জরুরী। আমাদের মনে আল্লাহর ভয় থাকলে আমাদের পাপ কাজ কমে যাবে। আল্লাহর প্রতি ভয় থাকলে আমাদের ইবাদত কবুল হবে। সকল ধরনের পাপ কাজ বর্জন হয়ে যাবে আমাদের মনে যদি আল্লাহর ভয় থাকে। প্রতেক ওয়াক্ত নামাজ পড়ার সময় আমাদের মনে করতে হবে যেন এটাই আমাদের জীবনের শেষ নামাজ। 

 সেজদার স্থানে তাকিয়ে নামাজ পরা


আমরা যখন নামাজ আদায় করবো আমাদের দৃষ্টি রাখতে হবে আমাদের সেজদার জায়গায়। তা হলে নামাজে মনোযোগী হতে পারবেন। -রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তির উপদেশ কামনায় বলেছিলেন আপনারা যখন নামাজ আদায় করবেন আপনার চোখ থাকবে আপনার সেজদার স্থানে। তাহলে আপনার নামাজে মনোযোগ বেড়ে যাবে। 

আমরা যখন নামাজে দাঁড়াবো আমাদের মনে করতে হবে যে আমরা আল্লাহর সাথে কথোপকথন হবে। এভাবে আমাদের নামাজে মনোযোগ বেড়ে যাবে। এছাড়াও আমাদের নামাজ পড়ার সময় সেজদার স্থানে চোখ রেখে নামাজ কায়েম করতে হবে। 

নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায়


লেখকের শেষকথা ঃ নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায়

আজকের এই পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায় সম্পর্কে।
আপনারা যদি উপরের বিষয়গুলো মেনে চলতে পারি তাহলে আমাদের নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধি করা সম্ভব। আমরা যখন নামাজ কায়েম করবো আমাদের অজু করা সহিহ হতে হবে এবং অজু করার পরে দোয়া করা জরুরী। 

এছাড়াও আমাদের নামাজে রুকু সেজদা দেওয়ার সময় ধীরে ধীরে রুকু সেজদা সম্পন্ন করতে হবে। নামাজে আপনারা কোনরকম তারাহুরা করবেন না। আস্তে ধীরে নামাজ আদায় করলে আল্লাহ্‌ তায়ালা খুশি হন। এজন্য আমাদের উচিত আন্তরিকতার সঙ্গে নামাজ পড়া এতে মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে নামাজে। তাছাড়াও আমাদের নামাজের সময় সুরা সহিহভাবে তেলাওয়াত করতে হবে এবং তেলাওয়াত বা কোরআনের অর্থ বুঝে পরা উচিত। 

অর্থ বুজে তেলাওয়াত করার ফলে আপনারা ইবাদতে স্বাদ পাবেন তৃপ্তি পাবেন ইনাশাল্লাহ। এছাড়াও অর্থ বুজে তেলাওয়াত করলে আল্লাহর সাথে আপনার ভালো কানেকশন হবে, আল্লাহ্‌ আপনাকে নুর দান করবেন। এছাড়াও আমাদের মনে সবসময় আল্লাহর ভয় রাখা উচিত তাহলে আমাদের ইবাদত করুল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং মনোযোগ বেড়ে যাবে। 

উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চললে আপনাদের নামাজে মনোযোগ বেড়ে যাবে আর উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলার পরেও আপনার নামাজে মনোযোগ না আসে তাহলে বিচলিত না হয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করুন আল্লাহ্‌ অবশ্যই আপনাকে উওম প্রতিদান দান করবেন ইনশাআল্লাহ্‌। আশা করি নামাজে মনোযোগী হওয়ার উপায় বুঝতে পেড়েছেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইউনিকমিস্ট্রির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন আমরা আপনাদের পজিটিভ কমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছি

comment url