গাড়িতে উঠলে বমি ভাবের সমস্যা দূর করুন ১০ উপায়ে
প্রায় সবাই ঘুরতে যেতে ভালবাসেন। কিন্তু বাসে কিংবা গাড়িতে উঠার কথা শুনলেই নানারকম দুশ্চিন্তা শুরু হয়। এই দুশ্চিন্তা হওয়ার কারণ মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব। মেডিকেলের ভাষায় এই সমস্যাকে মোশন সিকনেস” বা “কাইনেটোসিস” বলা হয়। আজকের এই পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো যে কীভাবে বমি বমি ভাব দূর করবেন খুব সহজেই।
এই সমস্যা থেকে সমাধান পেতে আপনাকে কিছু টিপস মানতে হবে। এই বমি বমি ভাব হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে।সেটা হতে পারে গতির কারণে অসুস্থতা বা মোশন সিকনেস, মাইগ্রেইনের ব্যথা, শারীরিক ব্যথা, অতিরিক্ত ক্লান্তি, অতিরিক্ত ধূমপান, বদ হজমের সমস্যা ইত্যাদির কারণে বমি বমি ভাব হতে পারে।
পেজ সূচীপত্রঃ
- মোশন সিকনেস কী?
- গাড়িতে উঠে বমি ভাব কেন হয়?
- মোশন সিকনেস এর লক্ষণ
- কাদের বেশি হয় মোশন সিকনেস?
- মোশন সিকনেস কাটিয়ে উঠবেন যেভাবে
- শেষকথা
মোশন সিকনেস কী?
আমরা যখন বাস, কার, কিংবা কোনো প্রকার যানবাহনে চরলে আমাদের নানারকম বমির সমস্যা
দেখা দেয়। আর এই বমির সমস্যাকে ডাক্তারের ভাষাতে বলা হয় মোশন সিকনেস। আমাদের
শরীরের চোখ, কানের ভেতরের অংশ আমাদের শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য আমাদের
মস্তিষকে এক সিগনাল প্রদান করে।
আমরা যখন কোনো গাড়ি বা যানবাহনে থাকি তখন আমাদের মস্তিষকে এই সিগন্যাল পাঠাতে
সমস্যা হয় যার ফলে আমাদের সংবেদনশীলতা নষ্ট হয়ে যায় এবং আমাদের বমি বমি ভাব হয়ে
থাকে। আর এই বমি ভাব কিংবা মাথা ঘোরা সমস্যাকে বলা হয় মোশন সিকনেস। যেকোনো গাড়িতে
চলাচল করার সময় এ সমস্যা হতে পারে যা অনেক অসুবিধাজনক।
গাড়িতে উঠে বমি ভাব কেন হয়?
আমরা যখন কোনো যানবাহনে চলাচল করি তখন আমাদের বমির সমস্যা বা মোশন সিকনেস দেখা
দেয়। যখন কোনো যানবাহন গতিশী্ল অবস্থায় থাকে তখন আমাদের চোখ আমাদের মস্তিষকে
সিগন্যাল পাঠাতে সমস্যা হয়। আমাদের চোখ দেখে যে আমরা স্থির হয়ে বসে আছি। কিন্তু
আমাদের মস্তিষ্ক সিগন্যাল দেয় যে আমরা গতিশীল।
আর এই কারণে আমাদের বমির সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও আরো অনেক কারণ
যেমনঃ অ্যাসিডিটি, অসুস্থতা, গাড়ির ধোঁয়া বা গাড়ির বাজে গন্ধের
কারণেও গাড়িতে বমি হতে পারে। এজন্য আমাদের বমি থেকে বাঁচতে স্বাভাবিক থাকতে হবে
সবসময়।
মোশন সিকনেস এর লক্ষণ
মোশন সিকনেস এর সমস্যা যেকোনো মানুষের যেকোনো সময় হতে পারে। কিন্তু এই লক্ষণের
মাত্রা অনেক বেশী হতে পারে ব্যাক্তিভেদে।
- বমি বমি ভাব হতে থাকে
- মাথা ঘোরা এবং মাথা প্রচুর ব্যাথা
- ঠান্ডা ঘাম বের হওয়া
- শরীররে অনেক ক্লান্তভাব থাকে
- মুখ ও ত্বক মলিন হয়ে যায়
কাদের বেশি হয় মোশন সিকনেস?
আমাদের অনেকের মোশন সিকনেস হয়ে থাকে কিন্তু এগুলো কাদের অনেক বেশী হয়ে থাকে
চলুন জেনে নেওয়া যাক
- ২ থেকে ১২ বছরের বাচ্চাদের মোশন সিকনেসের সমস্যা বেশী হয়ে থাকে।
- মহিলাদের মোশন সিকনেস অনেক বেশী হয়ে থাকে। মাসিকের সময়, গর্ভাবস্থায় এবং ঔষধ খাওয়ার কারণে এই সমস্যা হতে পারে।
- যাত্রার সময় টেনশন বেশী করলে।
- যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে তাদের এই মোশন সিকনেস সমস্যা হয়ে থাকে।
- যানবাহন এর মধ্যে বেশী লোকজন হলে। যানবাহনে বাতাস কম চলাচল করলে এবং বাজে দুর্গন্ধের কারণে এই মোশন সিকনেস হয়ে থাকে।
মোশন সিকনেস কাটিয়ে উঠবেন যেভাবে
গাড়িতে উঠে বমি করার চেয়ে আপনারা যদি কিছু উপায় মেনে চলেন তাহলে বমির সমস্যা বা
মোশন সিকনেস থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাবেন।
- যাত্রা শুরু করার আগে ঔষধ খেতে পারেন যা বমির ভাব দূর করবে।
- গাড়িতে পিছনের দিকে না বসে সামনের দিকে বসার জন্য চেস্টা করবেন
- জানালের পাশে বসলে বমি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে। তাই জানালার ধারে বসার জন্য চেস্টা করবেন।
- গাড়িতে ওঠার আগে হালকা কিছু খাবার খেতে পারেন। বেশী খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। যথাসম্ভব কম খাওয়ার চেস্টা করুন
- আদা খেতে পারেন বমি ভাব দূর করার জন্য
- লবঙ্গ বমি ভাব দূর করতে খুব কার্যকর তাই সমস্যা সমাধানে লবঙ্গ খেতে পারেন।
- লেবু এবং লেবু পাতা বমির ভাব দূর করতে পারে তাই লেবু বা লেবুর পাতা সাথে করে রাখতে পারেন
- বমি ভাব দূর করার জন্য চকোলেট খেতে পারেন।
- বমি করার কথা মাথায় নিয়ে আসা যাবে না।
- বিরতি নিয়ে যেতে পারেন
শেষকথা
আমরা আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি যে কীভাবে গাড়িতে উঠে বমি বমি ভাব
প্রতিরোধ করবেন সে সম্পর্কে। এছাড়াও আমরা আলোচনা করেছি মোশন সিকনেস সম্পর্কে।
যাদের যাদের বমির সমস্যা রয়েছে তারা চাইলেই গাড়িতে করে দূর কোথাও যেতে পারেন
না। তাদের জন্য আমার আজকের এই টিপস।
আপনারা যদি উপরের উপায়গুলো মেনে চলতে পারেন তাহলে আপনার যাত্রা হবে অনেক
আনন্দময়। তাই আপনার যাত্রা শুভ করতে আমাদের পোস্ট মনোযোগ সহকারে পরুন।
ইউনিকমিস্ট্রির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন আমরা আপনাদের পজিটিভ কমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছি
comment url