কুয়াকাটা ভ্রমণ: কম খরচে ১০টি সেরা অভিজ্ঞতা অর্জন করুন
আপনি কি কম খরচে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমন চাচ্ছেন। তাহলে আজকের পোস্ট টি
আপনার জন্য। আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করবো যে কীভাবে কম খরচে কুয়াকাটা
সমুদ্র সৈকত ভ্রমন করবেন সে উপায় সম্পর্কে।
কুয়াকাটা পাটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত। এই কুয়াকাটা সমদ্র সৈ্কত প্রায় ১৮ কিলোমিটার
দীর্ঘ এবং আপনারা এই কুয়াকাটা সমুদ্র সৈ্কত থেকে একসাথে সূর্যোদয় আর
সূর্যাস্ত দুটোই উপভোগ করতে পারবেন। আজকের পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে কম খরচে
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমন করবেন কীভাবে সে উপায় সম্পর্কে।
পেইজ সূচীপত্রঃ কম খরচে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমন
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত
কুয়াকাটা সমদ্র সৈকত পাটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত। এই সমদ্র সৈকত অনেক
পরিচ্ছন এবং সুন্দর। এই কুয়াকাটা সমদ্র সৈকত থেকে একসাথে সুর্যাস্ত এবং
সূর্যোদয় উপভোগ করা যায় বলে এই কুয়াকাটা সমদ্র সৈকত অন্যন্য জায়গা থেকে
আলাদা। আপনারা আর পৃথিবীতে এমন আর কোনো জায়গা পাবেন না যেখান থেকে
একসাথে সুর্যাস্ত এবং সূর্যোদয় উপভোগ করা যায়।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের খুব জনপ্রিয় একটা পর্যটনকেন্দ্র। শীতকালে
এই কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত নতুন রূপে সাজে এবং নানারকমের অতিথি পাখির দেখা
মিলে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এ। আপনারা যদি শীতকালে কুয়াকাটা সমুদ্র
সৈকত ভ্রমন করেন তাহলে সম্পূর্ণ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। এই
কুয়কাটা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে অনেক বিদেশী পর্যটক ভ্রমন করে থাকেন।
এই কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী হওয়ার কারণে একে সমুদ্র
কন্ন্যা বলে আখ্যায়িত করা হয়। একটি ভালো ভ্রমন প্ল্যান আপনার ভ্রমনকে আরো অনেক
বেশী আকর্ষণীয় করে তুলবে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কুয়াকাটা ভ্রমন সম্পর্কে
বিস্তারিত সকল তথ্য।
কম খরচে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমন
আজকের এ পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব কম খরচে কুয়াকাটা সমুদ্র
সৈকত ভ্রমন সম্পর্কে। আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি কিভাবে
আপনারা কম খরচে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমন করতে পারবেন। এবং কিভাবে
কুয়াকাটা যাবেন কুয়াকাটা যাওয়ার উপায় কুয়াকাটা গিয়ে কোথায় থাকবেন
বিস্তারিত সবকিছু।
কম খরচে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমন করতে চাইলে আপনাকে কিছু টিপস ফলো
করতে হবে যেগুলো ফলো করলে আপনারা অনেক কম টাকায় সাগরকন্যা কুয়াকাটায়
ভ্রমন করে আসতে পারবেন তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কম খরচে কুয়াকাটা সমুদ্র
সৈকত ভ্রমন সম্পর্কে
কুয়াকাটা যাওয়ার উপায়
আপনারা কুয়াকাটায় নদী এবং সড়কপথে ঢাকা থেকে খুব সহজে যেতে
পারবেন। বর্তমানে পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে খুব সহজেই ঢাকা থেকে
কুয়াকাটা অনেক কম সময়ে এবং খুব সহজে যাওয়া যায়।
ঢাকা থেকে বাসে করে কুয়াকাটা
আপনারা খুব সহজেই ঢাকা থেকে বাসে করে কুয়াকাটা পর্যন্ত যেতে পারবেন। ঢাকা
থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত দূরত্ব হচ্ছে প্রায় 280 কিলোমিটার। আপনারা যদি
বাসে করে যেতে চান তাহলে আপনাদের ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে
৬ থেকে ৭ ঘন্টা। আপনারা ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে কুয়াকাটা যাওয়ার
জন্য ডাইরেক্ট বাস পেয়ে যাবেন।
আরো পরুনঃ কম খরচে সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ
ঢাকার বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড থেকে আপনারা কুয়াকাটা যাওয়ার জন্য সরাসরি বাস
পেয়ে যাবেন। ঢাকার সায়েদাবাদ, আবদুল্লাপুর, আরামবাগ অথবা গাবতলী বাস
স্ট্যান্ড থেকে আপনারা সাকুরা পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন, গ্রীন
লাইন, ইউরো কোচ, হানিফ, টি আর ট্রাভেলস ইত্যাদি বাসে করে
সরাসরি কুয়াকাটা পর্যন্ত যেতে পারবেন।
আপনারা যদি নন এসি বাসে করে কুয়াকাটা পর্যন্ত যেতে চান তাহলে ভাড়া পড়বে
৮০০-৯০০ টাকা। এবং যদি এসি বাসে করে যেতে চান তাহলে ভাড়া আসবে ১১০০- ১৬০০
টাকা। আপনারা অনেকেই কম খরচে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমন সম্পর্কে জানতে চান।
ঢাকা থেকে লঞ্চে করে কুয়াকাটা
আপনারা যদি লঞ্চে করে কুয়াকাটা পর্যন্ত যেতে চান তাহলে আপনাদের নদীপথে সদরঘাট
থেকে বরিশাল অথবা পাটুয়াখালী পর্যন্ত গিয়ে সেখান থেকে বাসে করে
কুয়াকাটা পর্যন্ত যেতে হবে। সরাসরি আপনারা ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত
লঞ্চে করে যেতে পারবেন না।লঞ্চে ভ্রমণ করে আপনার ভালো একটা অভিজ্ঞতা তৈরি
হয়ে যাবে।
বর্তমানে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার কারণে লঞ্চে আর তেমন যাত্রীরা ভীড় করে
না। এজন্য আগের মতো আর লঞ্চ চলাচল করে না। আপনি যদি লঞ্চে করে
কুয়াকাটা পর্যন্ত যেতে চান তাহলে আপনাকে আগে থেকেই খোঁজ নিতে হবে
আপনি যেদিন ভ্রমণ করবেন সেদিন কোন লঞ্চ চলবে কিনা। প্রত্যেকদিন
সন্ধ্যায় সদরঘাট থেকে পাটুয়াখালী পর্যন্ত যাওয়ার জন্য লঞ্চ ছেড়ে
যায়।
এবং এই লঞ্চটি পাটুয়াখালী পৌঁছায় সকাল সাতটার সময়। আপনারা যদি লঞ্চে
করে পাটুয়াখালী পর্যন্ত যেতে চান তাহলে ডেকের ভাড়া পড়বে ৪০০ থেকে ৫০০
টাকা। এবং যদি সিঙ্গেল কেবিন নিতে চান তাহলে ১৩০০ টাকা ভাড়া
পড়বে। ডাবল কেবিনের ভাড়া ২৪০০ টাকা। আর যদি ভি আই পি
কেবিন নিতে চান তাহলে ভাড়া আসবে ৭০০০ টাকা।
পাঁটুয়াখালী পর্যন্ত যাওয়ার পর আপনাদের অটোতে করে বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত
গিয়ে বাসে করে কুয়াকাটা পর্যন্ত যেতে হবে। সেখান থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত
যেতে দুই ঘণ্টার মতো সময় লাগবে। এবং পাটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত
বাস ভাড়া পড়বে ১৫০-১৭০ টাকা। এছাড়াও আপনারা সদরঘাট থেকে বরিশালে
যাওয়ার উদ্দেশ্যে লঞ্চে উঠতে পারেন।
প্রত্যেকদিন সন্ধ্যার পর সদরঘাট থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে লঞ্চ ছেড়ে যায়।
বরিশাল পৌঁছানোর পর আপনাদের রুপাতলী বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত যাওয়া
লাগবে।রুপাতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে আপনাদের কুয়াকাটা যাওয়ার জন্য বাসে উঠতে
হবে। সেখান থেকে কুয়াকাটা যাওয়ার জন্য তিন ঘন্টার মত সময় লাগবে এবং বাস
ভাড়া লাগতে পারে ২০০- ২৫০ টাকা।
কুয়াকাটার হোটেল ও রিসোর্ট
কুয়াকাটায় আপনারা থাকার জন্য আপনাদের বাজেট অনুযায়ী হোটেলে অথবা রিসোর্ট
পেয়ে যাবেন।এখানে এত বেশি পরিমাণ থাকার জন্য হোটেল অথবা রিসোর্ট না থাকলেও
মোটামুটি বাজেটের অনেক হোটেল অথবা রিসোর্ট পেয়ে যাবেন। কুয়াকাটাতে আপনারা
মোটামুটি বাজেটের মধ্যে থাকতে পারবেন ২-৩ হাজার টাকা দিয়ে।
এবং আপনার যদি বাজেট অনেক বেশি হয়ে থাকে তাহলে আপনারা সিকদার রিসোর্ট এর
মতো সুন্দর এবং অভিজাত রিসোর্টে উঠতে পারেন। কুয়াকাটায়
আপনারা খুব ভালো মানের সি- ভিউ হোটেল পাবেন না।কিন্তু আপনারা যদি
জিরো পয়েন্টের আশেপাশে মোটামুটি মানের সি- ভিউ হোটেল পেয়ে যাবেন। জিরো
পয়েন্টের আশেপাশের হোটেলগুলোতে আপনাদের থাকার জন্য লাগতে পারে ১৫০০-৩০০০
টাকা।
ছুটির দিনগুলোতে কুয়াকাটায় থাকার জন্য হোটেল অথবা রিসোর্ট এর রুম পেতে অনেক
সমস্যা হয়ে থাকে। আপনারা যদি ছুটির সময় কুয়াকাটা ভ্রমণ করতে চান তাহলে
আগে থেকেই রুম বুকিং করে রাখতে পারেন।তবে আপনারা যদি ছুটির সময় ব্যতীত অন্য
সময় কুয়াকাটা ঘুরতে যান তাহলে সেখানে গিয়ে রুম দেখে যাচাই বাছাই
করে আপনার পছন্দ অনুযায়ী রুম নিতে পারবেন।
শিকদার রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলা
কুয়াকাটার সবচেয়ে ভালো পাঁচ তারকা হোটেল হচ্ছে সিকদার রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলা।
এই পাঁচ তারকা হোটেলটি জিরো পয়েন্ট থেকে ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই
হোটেলে আপনারা মান অনুযায়ী বিভিন্ন বাজেটের রুম পেয়ে যাবেন। এখানে
আপনারা আট হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত রুম ভাড়া নিতে
পারবেন।
এছাড়া আপনারা শিকদার রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলা রিসোর্টটিতে বিভিন্ন
অনুষ্ঠান ও বনভোজন করতে পারবেন। আপনার বাজেট যদি সীমিত না হয় তাহলে পুরো
পরিবার নিয়ে সময় কাটাতে পারবেন এই পাঁচ তরকা হোটেল শিকদার রিসোর্ট
অ্যান্ড ভিলাতে।
সুবিধাঃ
- খুব সুন্দর সুন্দর ডিলাক্স রুম, প্রিমিয়ার রুম এর সুবিধা
- বারান্দা থেকে সরাসরি প্রশস্ত সমুদ্র-সৈকত দেখা যায়
- হোটেলে সুইমিং পুল ও নৌকাভ্রমণের ব্যবস্থা আছে
কুয়াকাটা গ্র্যান্ড হোটেল
কুয়াকাটা গ্র্যান্ড হোটেল কুয়াকাটার আরেকটি পাঁচ তারকা
হোটেল। আপনারা জিরো পয়েন্ট থেকে খুব সহজেই এই কুয়াকাটা গ্রান্ড
হোটেলে পৌঁছাতে পারবেন। এই হোটেলে যাদের বাজেট একদম বেশি
তারা সহজেই থাকতে পারবেন। এই হোটেলে থাকতে খরচা হবে ১৫ হাজার
থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ হোটেলের প্রত্যেকটা রুম খুব
সুন্দর এবং অভিজাত্য।
এই হোটেলে রয়েছে হেলিকপ্টার এবং ভিআইপি লাউঞ্জ এর সুবিধা। এছাড়াও যেসব
সুবিধা পাবেন আপনারা।
সুবিধাঃ
- স্ট্যান্ডার্ড, প্রিমিয়াম ও প্রেসিডেন্সিয়াল সুইটের ব্যবস্থা আছে
- পুল ও বিভিন্নরকম খেলাধুলা করার ব্যবস্থা আছে
- আকর্ষণীয় গাড়ি ভাড়া নিয়ে ঘুরে দেখার সুযোগ আছে
হোটেল গ্রেভার ইন ইন্টারন্যাশনাল
হোটেল গ্রেভার ইন ইন্টারন্যাশনাল খুব সুন্দর একটা হোটেল। এই হোটেলটি
রাখাইন মহিলা মার্কেটের পূর্ব পাশে অবস্থিত। এখানকার প্রত্যেকটা
রুম আসবাবপত্র এবং অন্যান্য উপকরণ দিয়ে সাজানো। এখানে আপনারা
পেয়ে যাবেন শরীরচর্চা করার জন্য একটা ব্যায়ামাগার। এবং গাড়ি
রাখার জন্য সুন্দর পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে এই চার তারকা হোটেলে।
সুবিধাঃ
- এখানে থাকার জন্য পেয়ে যাবেন রয়াল, প্রিমিয়াম এবং ডিলাক্স এই তিন রকমের রুম
- অনুষ্ঠানের জন্য বড় কনফারেন্স রুম ও ঘাসের প্রাঙ্গন আছে
- সুস্বাদু দেশি, চীনা ও কাবাব জাতীয় খাবারের ব্যবস্থা আছে
হোটেল খান প্যালেস
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে খুব কাছে অবস্থিত এই হোটেল
খান প্যালেস।এ হোটেলটি সাধারণত মধ্যবিত্তদের জন্য। আপনারা এ হোটেলে
পাঁচ হাজার থেকে দশ হাজার টাকার মধ্যে রুম পেয়ে যাবেন। তবে সিজন
অনুযায়ী ভাড়া পরিবর্তন হতে পারে। এ হোটেলের প্রত্যেকটা রুমে রয়েছে
আলাদা-শৌচাগার।
সুবিধাঃ
- গাড়ি রাখার জন্য অনেক বড় পার্কিং লট আছে
- অনেক ধরনের বাঙালি,চাইনিজ, খাবার পাবেন
- সময় কাটানোর জন্য প্রাকৃতিক বাগান ও বড় টিভি আছে
ওশান ভিউ হোটেল অ্যান্ড কনভেনশন
এ হোটেলে আপনারা আপনাদের বাজেট অনুযায়ী থাকতে পারবেন। এই হোটেলটি
অবস্থিত রাখাইন মহিলা মার্কেটের বিপরীতে। ওশান ভিউ হোটেল অ্যান্ড কনভেনশন
হোটেলটি দুই তারকা বিশিষ্ট। স্কুল কলেজ এর নানা রকম অনুষ্ঠানের জন্য এই
হোটেলটি একদম পারফেক্ট। এছাড়াও এই হোটেলে রয়েছে আরো নানারকম
সুযোগ-সুবিধা।
সুবিধাঃ
- শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্ট্যান্ডার্ড ও ডিলাক্স রুম আছে
- বারান্দা থেকে সরাসরি সমুদ্র দেখতে পারবেন
- সকালে বুফে ব্রেকফাস্টের ব্যবস্থা আছে
কুয়াকাটা গিয়ে কোথায় খাবেন
কুয়াকাটা খাবারের জন্য আপনারা অনেক ভালো মানের হোটেল পেয়ে
যাবেন। কুয়াকাটার প্রায় বেশিরভাগ হোটেলে রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থা
রয়েছে। এছাড়াও এখানকার অনেকগুলো স্থানীয় রেস্টুরেন্ট রয়েছে যেগুলোতে
আপনারা বিভিন্ন রকমের খাবার পেয়ে যাবেন। বিশেষ করে সমুদ্রের তাজা
মাছ খেতে খুব সুস্বাদু।
কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের আশেপাশে অনেকগুলো খাবারের হোটেল রয়েছে যেগুলোতে
আপনারা অনেক কম দামে বিভিন্ন রকম খাবারের স্বাদ নিতে পারবেন। কুয়াকাটা গেলে
অবশ্যই ফিশ বারবিকিউ খেতে ভুলবেন না। জিরো পয়েন্টের আশেপাশে অনেক ফিশ ফ্রাই
মার্কেট রয়েছে যেগুলো থেকে আপনারা ফিশ বারবিকিউ এর সাব্দ নিতে পারবেন।
আপনি সেখান থেকে নিজের পছন্দ অনুযায়ী যে কোন মাছ দরদাম করে কিনে দিলে সেখানে
আপনার সামনেই তারা মাছটি বারবিকিউ করে দেবে। একপাশে সাগরের ঢেউয়ের শব্দ অন্য
পাশে আপনি এর ফিশ বারবিকিউ এর সাব্দ আপনার সারাজীবন মনে থাকবে।
কুয়াকাটার দর্শনীয় স্থান
কুয়াকাটা রয়েছে অনেক সুন্দর সমুদ্র সৈকত। এখানে দেখার মত আরো রয়েছে
অনেক দর্শনীয় স্থান।এখানে রয়েছে শুট্কি পল্লী, ক্রাব
আইল্যান্ড,গঙ্গামতির জঙ্গল,ফাতরার বন,কুয়াকাটার কুয়া,সীমা বৌদ্ধ মন্দির, লেবুর
চর এছাড়াও ইকোলজিকাল পার্ক ইত্যাদি।
শুটকি পল্লী
শুটকি পল্লীতে প্রচুর পরিমাণে শুটকি তৈরি করা হয়।সমুদ্র থেকে মাছ
ধরে সৈকতের পাশেই শুকিয়ে শুটকি তৈরি করা হয়। কুয়াকাটা সমুদ্র
সৈকতের পশ্চিমপাশেই শুটকি পল্লীর অবস্থান। এই শুটকি পল্লীতে নভেম্বর
থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শুটকি তৈরি করা হয়।এখান থেকে আপনারা খুব কম দামে অনেক
রকমের শুটকি ক্রয় করতে পারবেন।
ক্রাব আইল্যান্ড
ক্রাব আইল্যান্ড সমুদ্র থেকে পূর্ব দিকে অবস্থিত। এখানে গেলে আপনারা
হাজার হাজার কাঁকড়ার দল দেখতে পারবেন। এখানে নির্জন সমুদ্রে অনেক কাঁকড়া
ঘুরে বেড়ায়। অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত কুয়াকাটা থেকে ক্রাব
আইল্যান্ড পর্যন্ত যাওয়ার জন্য স্পিডবোট পাওয়া যায়। এখানে কোনো দোকান
না থাকায় প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে যেতে ভুলবেন না।
গঙ্গামতির জঙ্গল
গঙ্গামতির জঙ্গল অনেক সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর একটা
জঙ্গল। এ জঙ্গলে আপনারা বিভিন্ন রকমের পশুপাখি যেমন অনেক রকমের
পাখি, বন মোরগ, বানর ইত্যাদি দেখতে পারবেন এবং অনেক প্রজাতির নাম না
জানা গাছ দেখতে পারবেন। পূর্ব দিকে গঙ্গামতীর খাল পর্যন্ত এসে কুয়াকাটা
সমুদ্র সৈকত শেষ হয়েছে আর এখান থেকেই গঙ্গামতির জঙ্গল শুরু। এই জঙ্গল থেকে খুব
সুন্দর সুর্যাস্ত দেখতে পারবেন।
ফাতরার বন
ফাতরার বন অবস্থান সমুদ্র সৈকতের পশ্চিম দিকে। এই বন প্রায় সুন্দরবনের
মতোই। সুন্দরবনের যে যে বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই ফাতরার বনের ও সেসব বৈশিষ্ট্য
রয়েছে।এখানে আপনারা বানর, শুয়োর, অনেক প্রজাতির
পাখি, মোরগ, ইত্যাদি দেখতে পারবেন। আপনারা যদি কুয়াকাটা থেকে
ফাতরার বন পর্যন্ত যেতে চান তাহলে আপনাকে নৌকা ভাড়া করে নিয়ে যেতে হবে।
কোনো হিংস প্রাণী নেই এখানে।
কুয়াকাটার কুয়া
এই স্থানের নামকরণের পিছনে কুয়াকাটার কুয়ার গুরুত্ব রয়েছে। এই
কুয়াটির অবস্থান রাখাইনদের বাসস্থল কেরানিপাড়ায়। এপাড়ায় প্রবেশ করতে
করতে আপনাদের চোখে পড়বে এ কোয়াটি। অনেক বছর আগে এখানকার লোকজন
সমুদ্রের পানি নোনতা হওয়ার কারণে তা খাওয়ার অযোগ্য। এজন্য তারা
একটা কূপ খনন করে আর এভাবেই এ জায়গার নাম হয় কুয়াকাটা।
সীমা বৌদ্ধ মন্দির
সীমাবদ্ধ মন্দির বৌদ্ধদের তৈরি একটা মন্দির। এ মন্দির অবস্থান কুয়াকাটার
প্রাচীন কুয়ার সামনে। এ মন্দিরে রয়েছে 37 মন ওজনের অষ্ট ধাতুর
একটি পাচীন বৌদ্ধমূর্তি।
লেবুর চর
সমুদ্র সৈকত থেকে পাঁচ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত লেবুর চর। এখানে রয়েছে
গেওয়া,কড়াই ও গোলপাতার মত অসংখ্য গাছ। এখান থেকে সুন্দরবনের সবুজ গাছের
সারি ও সূর্যের সোনালী আভা আপনার অনেক ভালো লাগবে। সমুদ্র সৈকত থেকে
২০০-৩০০ টাকায় লেবুর চরে যেতে পারবেন।
ইকলোজিক্যাল পার্ক
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ইকলোজিক্যাল
পার্ক। এই পার্কে আপনারা অনেক রকমের প্রাণীর দেখা পাবেন। এবং প্রায় ৫০ প্রজাতির
পাখির দেখা মিলবে এই ইকলোজিক্যাল পার্কে। এছাড়াও অনেক রকমের গাছ যেমনঃ
সুন্দরী, অর্জুন, হিজল, পশুর, ইত্যাদি হাজারো উদ্ভিদ দেখতে পারবেন।
এই পার্ক প্রায় ১৩০০০ একরের জায়গা নিয়ে অবস্থিত। তাই এই পার্কে গেলে সময় নিয়ে
ঘুরতে যাবেন।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ট্যুর প্ল্যান
এবার আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব কিভাবে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ঘুরে
দেখবেন। আপনি যদি শুধু সমুদ্র দেখার জন্য তাহলে আপনি সম্দ্রের আশেপাশে
এবং জিরো পয়েন্ট দিয়ে ঘুরে সময় কাটাতে পারবেন। তবে আপনাকে কুয়াকাটা সম্পূর্ণ
সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এর আশেপাশের এলাকা বা স্পট দিয়ে ঘুরাফেরা করতে
হবে।
কুয়াকাটা গেলে অবশ্যই হাতে দুই-তিন দিন সময় নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট এর আশেপাশে সবগুলো দর্শনীয় স্থান। এই কুয়াকাটা
ভ্রমনে সূর্যোদয় দেখার জন্য সবচেয়ে ভালো স্থান হচ্ছে গঙ্গামতির চর।
এজন্য খুব সকালে বেড়িয়ে পরুন সূর্যোদয় উপভোগ করার জন্য। আর বিকেলে যেতে
পারেন সমুদ্র সৈকতের পাশের স্থা্নগুলতে।
আপনারা এই কুয়াকাটা সমুদ্র সৈ্কত ঘুরে দেখার জন্য পেয়ে যাবেন মোটরসাইকেল,
ইজিবাইক অথবা ভ্যানগাড়ি। আপনারা যেসব জায়গা ঘুরে দেখবেন তা বিস্তারিত বলে
দরদাম করে নিতে হবে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে চেক ইন করবেন। দুপুরের দিকে সমুদ্রের পারে গিয়ে গোসল করে
নিতে পারেন। তারপর হোটেলে এসে খাওয়াদাওয়া করে একটা মোটরসাইকেল ভাড়া করে
নিবেন। তারপরে যে জায়গাগুলো ঘুরে দেখবেন তা বলে দাম ঠিক করে বেড়িয়ে পরুন।
বিকালের দিকে লেবুর বন, ঝাউবন, ঘুরে দেখবেন। আর সুর্য ডুবার সময় লেবুর বনে
অবস্থান করার চেষ্টা করবেন।
২য় দিন
খুব ভরে ঘুম থেকে উঠবেন তারপরে বেড়িয়ে পড়বেন গংগামতির চরের উদ্দেশ্য। তারপর
লাল কাঁকরা সূর্যোদয়, দেখার পরে রাখাইন পল্লী , মার্কেট, কুয়া, বৌদ্ধ মন্দির,
২০০ বছরের পুরাতন নৌকা দেখার পরে হোটেলে ফিরবেন। দুপুরে খাওয়াদাওয়া করে নিয়ে
যেতে পারেন ফাতরার বন দেখার জন্য। রাতের গাড়িতে বাসায় আসার চেষ্টা করবেন আর
যদি লঞ্চে করে যেতে চান তাহলে ৫ টার আগে পাটুয়াখালী চলে আসুন।
কম খরচে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ট্যুর প্ল্যান
খরচা কেমন হবে তা নির্ভর করবে আপনার উপরে। আপনারা কীভাবে যাবেন, কি কি খাবার খাবেনএবং কেমন মানের হোটেলে থাকবেন এবং কোন জায়গাগুলো ঘুরে দেখবেন তার উপরে আপনার সম্পূর্ণ খরচ নির্ভর করবে। আপনারা যদি ৮ জনের গ্রুপ বা তার বেশী গ্রুপ করে কুয়াকাটা যেতে পারেন তাহলে আপনাদের খরচা অনেকটা কমে যাবে।
থাকা খাওয়া সহ ঘুরে বেড়ানোর খরচাও কমে যাবে। আপনারা যদি ছুটির সময় ছাড়া কুয়াকাটা ভ্রমনে যান তাহলে অনেক কিছুতেই ছাড় পাবেন। খরচা কমাতে চাইলে নন- এসি বাসে ভ্রমন করুন। খরচা কেমন হতে পারে তার একটা ধারণা নিচে আলোচনা করা হলো-
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ খরচ
- ঢাকা টু কুয়াকাটা বাস:৮০০ টাকা (নন-এসি) ১১০০ (এসি)।
- কুয়াকাটা হোটেল:মোটামুটি মানের হোটেল ডাবল বেড ভাড়া ১৬০০-২০০০ টাকা।
- মোটরসাইকেল ভাড়াঃ ১৫০০ টাকা
- সকালের খাবারঃ দুই দিন দুই বেলা জনপ্রতি ১৫০-২০০ টাকা
- দুপুরের খাবার: দুই দিন দুই বেলা, জনপ্রতি ৪০০-৫০০ টাকা
- তের খাবার: দুই দিনের রাতের খাবার, জনপ্রতি ২০০-৩০০ টাকা
- অন্যান্য খরচ: ১০০০ টাকা
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমণে সতর্কতা
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গোসল করার সময় আগে জায়গা নিরাপদ কি-না তা জানুন। কেও কোনো ছবি তুলে দিতে চাইলে তাদের সাথে কথা বলে দরদা্ম করে নিতে ভুলবেন না। কোনো কিছু কেনার আগে অবশ্যই দামাদামি করবেন। খাওয়া দাওয়া করার আগে খাবারের দাম জেনে নিন। কোনো রকম সমস্যায় পড়লে টুরিস্ট পুলিশকে জানান।
লেখকের শেষকথাঃ কম খরচে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমন
আমরা আজকে আলোচনা করেছি কম খরচে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমন সম্পর্ক। কোন কোন হোটেলগুলতে থাকতে পারবেন। কোন জায়গাগুলো ঘুরে না দেখলে আপনার ভ্রমন সম্পূর্ণ হবে না । কুয়াকাটা গিয়ে কি কি খাবেন কোন খাবারাগুলো অনেক জনপ্রিয় তা সব আলোচনা করা হয়েছে।
আপনারা অনেক কম খরচে কিভাবে কুয়াকাটা ভ্রমন করেবেন কোনো কিছু বুজতে সমস্যা হলে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে কিংবা কমেন্ট করে জানিয়ে দিন আপনার সমস্যার কথা। ধন্যবাদ।
ইউনিকমিস্ট্রির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন আমরা আপনাদের পজিটিভ কমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছি
comment url