জাপানের উচ্চ চাহিদা সম্পন্ন পেশার তালিকা ২০২৪
জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশী আপনারা অনেকেই জানেন না। আজকের এই পোস্টে আমরা
বিস্তারিত আলোচনা করবো যে জাপানে কোন কাজের চাহিদা এবং জাপানে কাজের বেতন
কতো। জাপান খুবই উন্নত এক দেশ। জাপানের প্রযুক্তি যেমন উন্নত তেমনি জাপানের প্রায়
সব কিছুই অনেক উন্নত।
তাই আপনারা যদি জাপানে গিয়ে নতুনভাবে ক্যারিয়ার শুরু করতে চান তাহলে আপনাদের
অবশ্যই জানা উচিত যে জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশী এবং কাজের বেতন কতো। তাই
আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করবো জাপানে কোন কাজের চাহিদা সে সম্পর্কে।
পেইজ সূচীপত্রঃ জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশী
- জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশী
- জাপানে সর্বনিম্ন বেতন কত
- জাপানে কোন কাজের বেতন বেশি
- বাংলাদেশ থেকে জাপান যেতে কত টাকা লাগে
- জাপানে থাকা খাওয়ার খরচ কতো
- জাপানে বাংলাদেশি শ্রমিকদের বেতন কতো
- জাপান যাওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা
- জাপান যাওয়ার উপায়
- জাপানের ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা
- সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার উপায়
- জাপান যেতে কত টাকা লাগে ২০২৪
- লেখকের শেষকথাঃজাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশী
জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশী
জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশী । জাপান অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অনেক শক্তিশালি এক
দেশ। এ দেশ যেমন অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অনেক শক্তিশালি তেমনি প্রযুক্তি
কিংবা পড়াশোনা চিকিতসা সব দিক দিয়েই অনেক উন্নত এক দেশ হচ্ছে জাপান। তাই
বাংলাদেশের অনেক মানুষ নিজের ভাগ্যকে বদলানোর জন্য জাপান যেতে চাই।
তাই আপনারা যদি জাপান কাজের জন্য যেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে যে
জাপানে কোন কাজের চাহিদা অনেক বেশী এবং জাপানের কোন কাজের বেতন কতো। বর্তমান সময়ে
জাপানে প্রচুর পরিমানে কাজের চাহিদা রয়েছে। বর্তমান সময়ে জাপানে বিভিন্ন কোম্পানি
রয়েছে যেগুলোতে অনেক বেশী বেতন প্রদান করা হয়।
জাপানে বর্তমান সময়ে বেশ কিছু খাতে কাজের চাহিদা রয়েছে, বিশেষ করে কিছু
নির্দিষ্ট শিল্পে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাজের ক্ষেত্রগুলো হলো:
- তথ্যপ্রযুক্তি (IT) ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
- স্বাস্থ্যসেবা ও নার্সিং
- প্রকৌশল (ইঞ্জিনিয়ারিং)
- শিক্ষা ও ইংরেজি ভাষার শিক্ষকতা
- হোটেল ও পর্যটন
- কারখানা ও ম্যানুফ্যাকচারিং
- কৃষি ও মৎস্য
- কম্পিউটার অপারেটর।
- ইলেকট্রিশিয়ান
- সেলসম্যানের কাজ।
তথ্যপ্রযুক্তি (IT) ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
জাপান তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে খুবই উন্নত তাই তারা তাদের দেশের
তথ্যপযুক্তির উন্নতির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), ক্লাউড কম্পিউটিং, এবং
সাইবার সিকিউরিটির ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। আর জাপানে
তথ্যপ্রযুক্তি (IT) ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কাজের চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি
পাচ্ছে।
স্বাস্থ্যসেবা ও নার্সিং
জাপানের জনসংখ্যার অনেক বেশী মানুষ বয়স্ক। তাই এই দেশের মানুষদের চিকিতসা সেবা
প্রদান করার জন্য স্বাস্থ্যসেবা ও নার্সিং কাজের জন্য প্রচুর লোকবল নিয়োগ
দেয়া হয়। তাই নার্সিং, কেয়ার গিভিং, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট
পেশাগুলোর চাহিদা দিন দিন অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রকৌশল (ইঞ্জিনিয়ারিং)
জাপান খুবই উন্নত দেশ তাই এই দেশে প্রতিনিয়ত প্রকৌশল এর প্রয়োজন হয়।
মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল, এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মীর
চাহিদা জাপানে উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে ম্যানুফ্যাকচারিং এবং অবকাঠামোগত
উন্নয়নের প্রকল্পগুলোতে দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজন হয়।
শিক্ষা ও ইংরেজি ভাষার শিক্ষকতা
জাপানে শিক্ষা ও ইংরেজি ভাষার শিক্ষকদের চাহিদা রয়েছে প্রচুর। বিশেষ করে
যারা জন্মগত ভাবে ইংরেজীতে কথা বলেন তাদের জন্য ভালো বেতনের চাকরির সুযোগ রয়েছে
জাপানে। বিভিন্ন স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, এবং ভাষা কেন্দ্রগুলোতে ইংরেজি
শিক্ষকদের ভালো বেতনে নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে।
হোটেল ও পর্যটন
জাপানে প্রতেকবছর অনেক পর্যটন ঘুরতে আসেন তাই পর্যটনের ক্ষেত্রে জাপান একটি
বড় বাজার। পর্যটকদের নানারকম সুবিধা প্রদান করার জন্য হোটেল ম্যানেজমেন্ট,
রেস্টুরেন্ট স্টাফ এবং ট্যুর গাইড হিসেবে অনেক মানুষদের নিয়োগ দেয়া হয়। এবং এসব
কাজের চাহিদার পাশাপাশি বেতন অনেক বেশী হয়ে থাকে ।
কারখানা ও ম্যানুফ্যাকচারিং
জাপানে কারখানা ও ম্যানুফ্যাকচারিং কাজের চাহিদা অনেক বেশী। কেনোনা জাপানে
বিভিন্ন উৎপাদন খাতে শ্রমিকদের প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে অটোমোবাইল,
ইলেকট্রনিক্স, এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে প্রচুর শ্রমিক নিয়োগ দেয়া
হয়।
কৃষি ও মৎস্য
জাপানে কৃষি ও মৎস্য কাজের জন্য প্রচুর মানুষের চাহিদা রয়েছে। আপনার যদি
ভালো দক্ষতা থাকে তাহলে খুব সহজেই আপনারা এই কাজগুলো করতে পারবেন। জাপানে
বিদেশি শ্রমিকদের কৃষি ও মৎস্য খাতে নিয়োগ দেয়া হয়, যেখানে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার
উপর ভিত্তি করে কাজের সুযোগ থাকে।
কম্পিউটার অপারেটর
জাপানে কম্পিউটার অপারেটর এর প্রবল চাহিদা রয়েছে। যাদের কম্পিউটার নিয়ে ভালো
দক্ষতা অভিজ্ঞতা রয়েছে তারা খুব সহজেই জাপানে অনেক ভালো বেতনের কাজ করতে
পারবেন। জাপান বিভিন্ন প্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ
দিয়ে থাকেন।
ইলেকট্রিশিয়ান
জাপানে ইলেকট্রিশিয়ান কাজের চাহিদা প্রচুর। জাপান ইলেকট্রনিক কাজ করার জন্য
তেমন দক্ষতা সম্পন্ন শ্রমিক না থাকার জন্য জাপান ইলেকট্রিশিয়ান কাজের চাহিদা
রয়েছে প্রচুর।
সেলসম্যানের কাজ।
জাপানে সেলসম্যানের কাজ এর প্রবল চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে বিভিন্ন দোকান অথবা
সুপারশপের জন্য প্রচুর সেলসম্যানের প্রয়োজন হয়। তবে এই সেলসম্যানের কাজ করার
জন্য আপনার ভাষা জানা অনেক জরুরী।
জাপানের এইসব খাতে দক্ষ কর্মীর চাহিদা বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হলো জনসংখ্যা
হ্রাস ও বয়স্কদের সংখ্যা বৃদ্ধি। জাপানে কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতা, ভাষা
জ্ঞান (জাপানি ভাষা) এবং অভিজ্ঞতা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
জাপানে সর্বনিম্ন বেতন কত
জাপানে সর্বনিম্ন বেতন নির্ভর করে প্রতিটি অঞ্চলের উপর ভিত্তি
করে। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, জাপানের সর্বনিম্ন বেতন ঘণ্টাপ্রতি
প্রায় ৯০০ থেকে ১,১০০ ইয়েন এর মধ্যে থাকে, যা অঞ্চলভেদে পরিবর্তিত হয়।
জাপানের টোকিও তে সর্বনিম্ন বেতন ঘণ্টাপ্রতি প্রায় ১,১০০ ইয়েন নীর্ধারন
করা হয়ে থাকে।
এছাড়াও জাপানের ওসাকা তে ঘন্টাপ্রতি বেতন নির্ধারণ করা
হয় প্রায় ১,০২৩ ইয়েন। এছাড়াও গ্রামীণ এলাকাগুলোতে প্রায় ৯০০
ইয়েন বা তার কাছাকাছি বেতন ধরা হয়। জাপানে আপনাকে প্রতেক সপ্তাহে প্রায় ৪০
ঘন্টার মতো কাজ করতে হবে।জাপানের সর্বনিম্ন বেতন প্রতি বছর সংশোধন করা হয়, এবং
অঞ্চলভেদে এই হার ভিন্ন হতে পারে।
জাপানে কোন কাজের বেতন বেশি
জাপানে কোন কাজের বেতন বেশি আপনারা অনেকেই সঠিক তথ্য পেতে চান। আজকে আমরা
আলোচনা করবো জাপানে কোন কাজের বেতন বেশি। জাপানের উচ্চ বেতনের
কাজগুলো দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং বিশেষায়িত জ্ঞানের ওপর নির্ভর করে। কিছু
কিছু কাজের জন্য জাপানে উচ্চমানের বেতন নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে
উল্লেখযোগ্য কাজগুলো হলো--
তথ্যপ্রযুক্তি (IT) ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট:
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), সাইবার সিকিউরিটি, এবং ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের
ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের বেতন অনেক বেশি ধরা হয়। জাপানের সিনিয়র সফটওয়্যার
ইঞ্জিনিয়াররা বার্ষিক ৮-১০ মিলিয়ন ইয়েন বা তার বেশি বেতন পেয়ে থাকেন।
ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্স:
জাপান বিনিয়োগ ব্যাংকিং, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট এবং ফিনটেক খাতে চাকরির
ক্ষেত্রে উচ্চ বেতন প্রদান করে থাকেন। বিশেষ করে ফাইন্যান্সিয়াল
অ্যানালিস্ট, ট্রেডার বা পরামর্শকদের বেতন ৮-১২ মিলিয়ন ইয়েন বা তারও বেশি হতে
পারে।
মেডিক্যাল
জাপানে ডাক্তার, সার্জন এবং মেডিক্যাল স্পেশালিস্টদের বেতন অত্যন্ত বেশি
নির্ধারণ করা হয়। বিশেষ করে সার্জন এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বার্ষিক ১২-২০
মিলিয়ন ইয়েন বা তারও বেশি বেতন পেতে পারেন।
ইঞ্জিনিয়ারিং
জাপানে ইঞ্জিনিয়ার দের বেতন অনেক বেশী দেয়া হয়ে থাকে। বিশেষ
করে মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল, এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের
বিশেষজ্ঞরা উচ্চ বেতন পেয়ে থাকেন। বড় কোম্পানিতে সিনিয়র ইঞ্জিনিয়াররা ৭-১০
মিলিয়ন ইয়েন বা তার বেশি বেতন পেতে পারেন।
আইনজীবী
জাপানে আইনজীবীদের বেতন অনেক ভালো মানের হয়ে থাকে বিশেষ করে
আন্তর্জাতিক বা বৃহৎ কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে। আইনজীবীরা বছরে ৮-১৫ মিলিয়ন ইয়েন
বা তারও বেশি আয় করতে পারেন।
বিমানচালক
জাপানে বিমানচালকদের বেতন অনেক বেশী হয়ে থাকে। এয়ারলাইন পাইলটদের বার্ষিক বেতন
প্রায় ১০-২০ মিলিয়ন ইয়েন বা তারও বেশি হতে পারে।
ম্যানেজমেন্ট পজিশন
বড় কোম্পানির ম্যানেজার, ডিরেক্টর, বা এক্সিকিউটিভ স্তরের কর্মকর্তা (CEO,
CFO) সাধারণত খুব উচ্চ বেতন পান। এই পজিশনগুলোতে বার্ষিক বেতন ১৫-৩০ মিলিয়ন
ইয়েন বা তারও বেশি হতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে জাপান যেতে কত টাকা লাগে
জাপান খুবই সুন্দর এবং শক্তিশালি এক দেশ। তাই আমরা অনেকেই কাজের জন্য অথবা
ঘুরতে যাওয়ার জন্য কিংবা উচ্চশিক্ষার জন্য জাপান যেতে চাই। কিন্তু আমরা জানি
না বাংলাদেশ থেকে জাপান যেতে কত টাকা লাগে। তাই আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা
করবো বাংলাদেশ থেকে জাপান যেতে কত টাকা লাগে।
জাপান যাওয়ার জন্য ্কত খরচ হবে তা নির্ভর করবে ভিসার ধরণ, কাজের চুক্তি,
থাকা-খাওয়ার খরচ, বিমানের টিকিট, এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ এর উপরে।
জাপানের ভিসা খুব সহজেই পাওয়া যায় না। তাই আপনাকে জাপানের ভিসা পাওয়ার জন্য
অবশ্যই জাপানী ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে। জাপানের ভিসা ফি নির্ভর
করে ভিসার ধরন ও প্রসেসিংয়ের উপর।
আপনারা যদি ওয়ার্ক ভিসায় জাপান যেতে চান তাহলে আপনার ভিসা ফি লাগবে ৩-৪ হাজার
টাকা। আর যদি আপনারা উচ্চ শিক্ষার জন্য স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চান তাহলে
আপনাদের ভিসা ফি লাগবে ৪-৫ হাজার টাকা। বাংলাদেশ থেকে জাপান যাওয়ার জন্য
আপনাকে অবশ্যই বিমানে করে যেতে হবে। তাই বিমানের টিকিট এর মূল্য নির্ভর
করবে সময় এবং এয়ারলাইনের ওপর।
সাধারণত বিমানের টিকিট এর মূল্য ৫০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকা বা তার বেশি
হতে পারে। আর আপনারা বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যম ব্যবহার করলে ওয়ার্ক ভিসা ফি
সাধারণত ২-৪ লক্ষ টাকা নিতে পারে। এছাড়াও আপনাকে ভিসার জন্য আবেদন করার
সময় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য ৫-১০ হাজার টাকা খরচ হতে
পারে।
সাধারণভাবে বাংলাদেশ থেকে জাপান যাওয়ার জন্য স্টুডেন্ট ভিসায় খরচ হতে পারে
৫-৬ লক্ষ টাকা। আর যদি ওয়ার্ক ভিসায় জাপান যেতে চান তাহলে খরচা হতে পারে ৯-১৫
লক্ষ টাকা। আর আপনারা যদি ভিজিট ভিসায় জাপান যেতে চান তাহলে খরচা হতে পারে ৫-
১০ লক্ষ টাকা। আশা করি যে বাংলাদেশ থেকে জাপান যাওয়ার খরচা সম্পর্কে ধারণা
পেয়েছেন।
জাপানে থাকা খাওয়ার খরচ কতো
জাপানে থাকা খাওয়ার খরচ নির্ভর করবে আপনারা কোন শহরে থাকছেন এবং আপনার
জীবনযাত্রার মান কেমন তার উপরে। আপনারা যদি টোকিও অথবা ওসাকা মত বড়
শহরে থাকতে চান তাহলে আপনাদের খরচ অনেক বেশী হবে। আর যদি গ্রাম অথবা ছোট শহরে
থাকেন তাহলে খরচ কিছুটা কম হবে।
আপনারা যদি একজন টোকিও অথবা ওসাকা শহরে থাকতে চান তাহলে ভাড়া আসতে
পারে ৫০,০০০ থেকে ১,২০,০০০ ইয়েন যা বাংলাদেশি টাকায় ৩০,০০০ থেকে
৭০,০০০ টাকা হতে পারে। আর যদি আপনারা এই শহরে বর কোনো অ্যাপার্টমেন্টে
নিয়ে থাকেন তাহলে ভাড়া আসতে পারে ১,২০,০০০ থেকে ২,৫০,০০০ ইয়েন যা বাংলা
টাকায় প্রায় ৭০,০০০ থেকে ১.৫ লাখ টাকা।
আর আপনারা যদি ছোট শহরে অথবা গ্রামীণ এলাকায় থাকেন তাহলে ভাড়া অনেক কম হবে।
এই জায়গায় ভাড়া আসতে পারে প্রতি মাসে ৩০,০০০ থেকে ৬০,০০০ ইয়েন যা
বাংলাদেশি টাকায় ২০,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকা। আর আপনারা যদি বাসায় রান্না
করে খেতে পারেন তাহলে আপনাদের খরচ হতে পারে ২৫,০০০ থেকে ৪০,০০০ ইয়েন যা
বাংলা টাকায় ১৫-৩০ হাজার টাকা।
জাপানে বাংলাদেশি শ্রমিকদের বেতন কতো
জাপানে বাংলাদেশি শ্রমিকদের বেতন কাজের ধরণ, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং কাজের
চুক্তির ওপর নির্ভর করে। সাধারণত, বাংলাদেশি শ্রমিকরা জাপানে নিম্ন ও মাঝারি
স্তরের কাজের জন্য নিয়োগ পেয়ে থাকেন, যেমন নির্মাণ, কৃষি,
ম্যানুফ্যাকচারিং, এবং সেবাখাতে। তাদের বেতন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জাপানের
সর্বনিম্ন মজুরির ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।
ম্যানুফ্যাকচারিং এবং নির্মাণ খাতে ঘন্টাপ্রতি বেতন ৯০০ থেকে
১,২০০ ইয়েন এর মধ্যে থাকে। এবং এই কাজের মাসিক বেতন ১,৫০,০০০ থেকে
২,৫০,০০০ ইয়েন যা বংলাদেশি টাকায় ১,০০,০০০ থেকে ১,৮০,০০০ টাকা হয়ে
থাকে। কৃষি ও সেবাখাতে ঘন্টাপ্রতি বেতন ধরা হয় ৯০০ থেকে ১,১০০
ইয়েন। এবং মাসিক বেতন ১,৫০,০০০ থেকে ২,০০,০০০ ইয়েন।
যা বাংলাদেশি টাকায় ১,০০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ টাকা হতে পারে। জাপানের
বেশিরভাগ কাজের ক্ষেত্রে কর্মচারীদের জন্য থাকা এবং কিছু ক্ষেত্রে
খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, যা তাদের বেতনের সাথে যুক্ত হয় না। এই সুবিধা
থাকলে তাদের বাস্তব খরচ কম হয়। এছাড়াও, ওভারটাইম করলে বাড়তি আয় হয়
এবং কর্মীদের বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা দেওয়া হয়, যেমন স্বাস্থ্য
বীমা এবং পেনশন সুবিধা।
জাপান যাওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা
জাপানে যাওয়ার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ভর করে আপনারা কোন ভিসার মাধ্যমে
জাপান যাবেন এবং কোন কাজ বা শিক্ষার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন তার উপরে। আপনারা
যদি কাজের জন্য জাপান যেতে চান তাহলে আপনি কোন ধরনের কাজ করার জন্য যাবেন তার
উপরে শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ভর করে। আপনারা যদি ইঞ্জিনিয়ারিং কাজ করার
জন্য
জাপান যেতে চান তাহলে আপনার স্নাতক ডিগ্রি প্রয়োজন। আর যদি শিক্ষক
হিসাবে জাপানে যেতে চান তাহলে আপনার স্নাতক ডিগ্রি থাকা লাগবে। আর যদি
আপনারা কৃষি অথবা নির্মাণ কাজে যেতে চান তাহলে কমপক্ষে মাধ্যমিক
(SSC) বা উচ্চ মাধ্যমিক (HSC) পাস করতে হবে। আর যদি আপনারা উচ্চশিক্ষার জন্য
জাপান যেতে চান তাহলে---
আপনারা কোন লেভেলে পড়াশোনা করতে চান তার উপরে নির্ভর করবে। আপনারা
যদি অনার্স/স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করার জন্য জাপান যেতে চান
তাহলে উচ্চ মাধ্যমিক (HSC) বা সমমানের যোগ্যতা থাকতে হবে।
যদি মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করার জন্য যেতে চান তাহলে স্বীকৃত
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি প্রয়োজন হবে জাপানের উচ্চশিক্ষার
জন্য।
জাপান যাওয়ার উপায়
জাপান যাওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায় রয়েছে। যা নীর্ভোর করে আপনারা
কোন উদ্দেশ্যে যেতে চান তার ওপর। জাপানে যাওয়ার জন্য কাজ, পড়াশোনা
এবং ঘুরতে যাওয়ার জন্য প্রক্রিয়া ভিন্ন হয়ে থাকে। আপনারা যদি জাপানে কাজ করার
জন্য যেতে চান তাহলে আপনাকে ওয়ার্ক ভিসার আবেদন করতে হবে। এজন্য আপনাকে কোনো
কোম্পানি থেকে কাজের অফার পাওয়া লাগবে।
আর যদি আপনারা স্টুডেন্ট ভিসায় জাপান যেতে চান তাহলে আপনাকে জাপানের কোনো
বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, বা ভাষা স্কুল থেকে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। তার পড়ে
আপনাকে COE এর জন্য আবেদন করা লাগবে। (COE পাওয়ার পর আপনারা ভিসার জন্য
আবেদন করতে পারবেন। আর যদি আপনারা ভ্রমন ভিসায় যেতে চান তাহলে ---
আপনাকে জাপানের দূতাবাসে ভ্রমণ ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে এবং আবেদন
করার সময় পাসপোর্ট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, টিকেট এবং থাকার জায়গার
নিশ্চিতকরণ প্রয়োজন হবে।
জাপানের ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা
জাপানের ১ ইয়েন (JPY) বাংলাদেশের কত টাকা (BDT) হবে তা নির্ভর করে বর্তমান
মুদ্রা বিনিময় হার (Exchange Rate) এর উপর। ২০২৪ সালের বাংলাদেশের জাপানী
টাকার বিনিময় হার ছিল ১ জাপানি ইয়েন = প্রায় ০.৭০ থেকে ০.৭৫
বাংলাদেশি টাকা। এই টাকার আনুমানিক হার বিভিন্ন সময় পরিবর্তন হতে
পারে।
সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার উপায়
বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার কয়েকটি প্রধান উপায় রয়েছে, যা
মূলত কর্মসংস্থান ও শিক্ষার উদ্দেশ্যে হয়। বাংলাদেশ সরকার এবং জাপান সরকারের
মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তির মাধ্যমে এই সুযোগগুলো তৈরি হয়েছে। এখানে
সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার কয়েকটি প্রধান উপায় তুলে ধরা হলো:
প্রক্রিয়া:
- BMET এর মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে।
- প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।
- নির্বাচিত হলে BMET এর সহায়তায় জাপানে যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে
প্রক্রিয়া:
- বাংলাদেশে অবস্থিত জাপান দূতাবাসে MEXT স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হবে।
- আবেদন করার পর, দূতাবাসের নিয়ম অনুযায়ী লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
- সফল আবেদনকারীরা জাপানে পড়াশোনা করার সুযোগ পাবেন।
সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বৈধ প্রক্রিয়া
অনুসরণ করা এবং প্রতারণা থেকে নিজেকে রক্ষা করা। বাংলাদেশ সরকার এবং
জাপান সরকারের অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে কাজ করলে খুব সহজেই কোনো ঝামেলা
ছাড়াই রক্ষিত উপায়ে বিদেশে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায়।
জাপান যেতে কত টাকা লাগে ২০২৪
২০২৪ সালে জাপান ভ্রমণের জন্য খরচ নির্ভর করে আপনি কোন উদ্দেশ্যে (যেমন
পর্যটন, শিক্ষাগত বা কর্মসংস্থান) যাচ্ছেন এবং আপনার যাত্রার দৈর্ঘ্য,
থাকার ব্যবস্থা এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত চাহিদার ওপর। তবে সাধারণত, জাপান
ভ্রমণের খরচের মধ্যে বিমান ভাড়া, থাকা-খাওয়া, ভিসা ফি, এবং অন্যান্য
খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে। নিচে আনুমানিক খরচ দেওয়া হলোঃ
আপনারা যদি কাজের জন্য জাপান যেতে চান তাহলে আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায়
জাপান যাওয়া লাগবে। আর ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় জাপান যাওয়ার জন্য খরচা হতে
পারে ৬-৭ লাখ টাকা। আর আপনারা যদি স্টুডেন্ট ভিসায় জাপান যেতে চান তাহলে
আপনাদের খরচা হবে ৫-৬ লাখ টাকা।
লেখকের শেষকথাঃজাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশী
আজকের এই পোস্ট বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশী এবং
কোন কাজের বেতন বেশী সে সম্পর্কে। জাপানে বর্তমানে কর্মসংস্থানের চাহিদা
ক্রমবর্ধমান এবং বিভিন্ন খাতে প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন। বিশেষ করে
টেকনিক্যাল এবং দক্ষ শ্রমিক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসেবা, আইটি, কৃষি,
নির্মাণ এবং সেবাখাতের কাজগুলোতে বিশাল চাহিদা রয়েছে।
তবে জাপানে কাজ করতে গেলে ভাষার দক্ষতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন রয়েছে।
সঠিক প্রশিক্ষণ এবং বৈধ উপায়ে জাপানে গিয়ে কাজের মাধ্যমে আপনি নিজের
ক্যারিয়ারকে সমৃদ্ধ করতে পারেন। আশা করা যায়, জাপান কোন কাজের চাহিদা বেশী
আপনারা বুঝতে পেরেছেন যদি পোস্ট আপনাদের উপকারে আসে তাহলে কমেন্ট করুন।
ইউনিকমিস্ট্রির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন আমরা আপনাদের পজিটিভ কমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছি
comment url