গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা প্রতিরোধ করার ১০ উপায়

গর্ভাবস্থায় যেসব ফল খাওয়া বিপজ্জনক সতর্ক থাকুন!

গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হয় কেন আপনারা অনেকেই সঠিক জানেন না। গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হওয়া খুবই স্বাভাবিক এবং বিভিন্ন কারণে গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হতে পারে। আপনার তলপেটের ব্যথা যদি স্বাভাবিক কারণেও হয়ে থাকে তবুও কিছু ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত। 

গর্ভাবস্থায় -তলপেটে -ব্যথা -হয় -কেন

গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে এছাড়াও আপনারা অনেকেই জানতে চান যে গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে তলপেটে ব্যথা হয় কেন আজকের এই পোস্টে আমরা বিস্তারিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যে গর্ভাবস্থায় তলপেটে কিসের জন্য ব্যথা অনুভূত হয় এবং কি কি করলে এসব ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং ব্যথা হওয়ার কারণ । 

পেইজ সুচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হয় কেন

গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হয় কেন

গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হয় কেন এবং গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে তলপেটে ব্যথা হয় কেন আপনারা অনেকেই এইসব প্রশ্নের উওর জানেন না। গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হওয়া খুবই স্বাভাবিক এক বিষয়। এবং গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই বিষয়ে খুবই সতর্ক থাকা প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হয় কেন জানতে পড়তে থাকুন। 

গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হওয়ার কারণ ঃ 

১. গর্ভাশয় প্রসারণ

গর্ভাবস্থায় আপনার গর্ভাশয় ধীরে ধীরে বড় হতে শুরু করে যার ফলে তলপেটে মৃদু চাপ বা ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে। এই সমস্যা প্রধানত গর্ভাবস্থার প্রথম এবং দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে দেখা যায়। 

২. রাউন্ড লিগামেন্ট ব্যথা

গর্ভাশয়কে ধরে রাখার জন্য রাউন্ড লিগামেন্ট নামের পেশিগুলোতে টান পড়ে যার কারণে গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হয়। গর্ভাবস্থার দুই নাম্বার মাসে এই সমস্যা বেশী দেখা যায়। এই ব্যথা হঠাৎ করেই শুরু হয় এবং কিছুক্ষণ পরে কমে যেতে শুরু করে। 

৩. গ্যাস বা হজমের সমস্যা

গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন হওয়ার কারণে হজম প্রক্রিয়া অনেক ধীর হয়ে যায় যার ফলে পেটে গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয় এবং যার কারণে গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা অনুভূত হয়। 

৪. ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন

গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এই সংকোচন দেখা দিতে পারে। যার ফলে তলপেটে হালকা  ব্যথা অনুভুত হয়ে থাকে। এই ব্যথার জন্য ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই এই ব্যথা প্রকৃত প্রসবের সংকোচন নয়।

৫. গর্ভপাতের সম্ভাবনা

প্রথম ত্রৈমাসিকের দিকে তলপেটে ব্যথা এবং রক্তপাত এবং গর্ভপাতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এইরকম অবস্থা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। 

৬. প্লাসেন্টা সমস্যা

গর্ভাবস্থার শেষের দিকে তলপেটে খুব ব্যথা অনুভূত হলে তা হতে পারে  প্লাসেন্টার সমস্যা। এই সমস্যা অনেক বিপদজন্নক এবং মাড়াত্নক তাই এই সমস্যা দেখা দিলে তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখানো উচিত। 

যদি তলপেটে ব্যথা খুব বেশি হয় এবং এই সমস্যা অনেকদিন থেকে হয়ে থাকে এছাড়াও কোনো প্রকার রক্তপাত হয়ে থাকল খুব দ্রুত  চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।

গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে তলপেটে ব্যথা হয় কেন

গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে তলপেটে ব্যথা হয় কেন আপনারা অনেকেই এই প্রশ্ন করে থাকেন। গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা সাধারণত একটি স্বাভাবিক বিষয়, কিন্তু এর বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। তলপেটে ব্যথা হওয়ার কিছু কারণ থাকতে পারে খুবই স্বাভাবিক এবং কিছু কারণ হতে পারে জটিলতার লক্ষণ। গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে তলপেটে ব্যথা হওয়ার কারণ হলো; 

গর্ভাবস্থায় গর্ভাশয় খুব  দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। যার কারনে পেশি এবং লিগামেন্ট এ টান অনুভূত হয়। যার কারণে তলপেটে হালকা বা মাঝারি ব্যথা হয়ে থাকে। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন হওয়ার জন্য হজম প্রক্রিয়া অনেক স্লো হয়ে যায় যার কারণে পেটে গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি হয়ে তলপেটে ব্যথা অনুভূত হয়। 

তাছাড়া গর্ভাশয়কে ধরে রাখার জন্য একটা রাউন্ড লিগামেন্ট নামে একটি টিস্যু থাকে যার ফলে গর্ভাশয় আস্তে আস্তে বড় হতে শুরু করে যার ফলে গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে তলপেটে ব্যথা হয়। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় একসময় পেট শক্ত হতে শুরু করে এবং ব্যথা অনুভূত হতে পারে যা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এক বিষয়। 

যদি তলপেটে ব্যথা হওয়ার পাশাপাশি  রক্তপাত হতে শুরু করে তাহলে তাহলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে এজন্য এরকম সমস্যা দেখা দিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। এছাড়াও যদি গর্ভধারণ গর্ভাশয়ের বাইরে হয়ে থাকে তাহলে তলপেটে প্রচুর ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এরকম সমস্যার সম্মুখীন হলে  তাড়াতাড়ি চিকিৎসার প্রয়োজন। 

যদি গর্ভাবস্থায় অনেক বেশী ব্যথা দেখা দেয় তাহলে ডাক্তার দেখানো জরুরী। তা না হলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হওয়া লাগতে পারে। 

গর্ভাবস্থায় পেট শক্ত হয় কেন

গর্ভাবস্থায় পেট শক্ত হয় কেন এবং পেট শক্ত হলে কি কোন সমস্যা হতে পারে অনেকেই এই উওর জানেন না। গর্ভাবস্থায় পেট শক্ত হওয়া একটি সাধারণ ঘটনা। এবং পেট শক্ত হওয়ার বিভিন্ন কারন থাকতে পারে। গর্ভাবস্থায় পেট শক্ত হওয়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বাভাবিক আবার অনেক ক্ষেত্রে জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। 

গর্ভাবস্থায় পেট শক্ত হওয়ার কারণ হলোঃ

গর্ভাবস্থায় অনেক সময় ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন দেখা দিতে পারে। এটা হচ্ছে মিথ্যা সংকোচন। এই সংকোচন সাধারণত দ্বিতীয় বা তৃতীয় ত্রৈমাসিকের সময় গর্ভাশয়ের পেশিগুলর মাঝে সংকুচিত হয় এবং যার ফলে পেট শক্ত হয়ে যায়। এই সমস্যা কিছু সময়ের জন্য হয়ে থাকে। এই সমস্যাগুলো মুলত শরীরকে প্রকৃত প্রসবের জন্য প্রস্তুত করতে সহায়তা করে।

এছাড়াও গর্ভবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন হওয়ার জন্য পেটে গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয় যার ফলে পেট শক্ত হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও কিছু কিছু ক্ষেত্রে গর্ভাশয় বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য পেটের পেশি ও লিগামেন্ট এ টান অনুভূত হয়ে থাকে যার কারণে পেট শক্ত মনে হয়। এছাড়াও যখন প্রসব এর সময় হয়ে যায় তখন পেট শক্ত ও চাপা মনে হয়। 

তাছাড়া কিছু কিছু সময় শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিলে গর্ভাশয়ের পেশি সঙ্কুচিত হয়ে যায় যার ফলে পেট শক্ত হতে শুরু করে। তখন যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা হয় তাহলে এই সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। এছাড়াও কিছু সময় পেট শক্ত হওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। যদি এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি বা প্লাসেন্টার জটিলতা দেখা দেয় তাহলে পেটে তিব্র ব্যথা হতে পারে। 

যদি কখনো এমন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়াও যদি পেট অনেকদিন থেকে শক্ত হয়ে থাকে এবং অনেক ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

পেট শক্ত হলে কি করবেনঃ 

  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া
  • শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখা
  • হালকা হাঁটা বা নড়াচড়া করে শরীরকে আরাম দেওয়া

গর্ভাবস্থায় -তলপেটে -ব্যথা -হয় -কেন

গর্ভাবস্থায় তৃতীয় মাসে তলপেটে ব্যথা হয় কেন

গর্ভাবস্থায় তৃতীয় মাসে তলপেটে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক এক বিষয় এবং এই ব্যথা হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে।  বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি গর্ভাবস্থার স্বাভাবিক পরিবর্তনের অংশ, তবে কখনও কখনও এটি সতর্ক সংকেতও হতে পারে। নিচে এর কিছু কারণ তুলে ধরা হলোঃ 

গর্ভাবস্থার তৃতীয় মাসে গর্ভাশয় অনেক দ্রুত বড় হতে শুরু করে যার ফলে আশেপাশের পেশি এবং লিগামেন্টে টান পড়ে যার ফলে তলপেটে হালকা অথবা তীব্র ব্যাথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও গর্ভাশয় ধরে রাখার জন্য  রাউন্ড লিগামেন্ট নামের পেশিগুলো খুব দ্রুত বড় হতে শুরু করে যার কারণে তৃতীয় মাসে তলপেটে ব্যথা হয়। 

এছাড়াও গর্ভাবস্থায় তৃতীয় মাসে হরমোনের পরিবর্তন হওয়ার কারণে গ্যাসের সৃষ্টি হয় যার ফলে পেটে হালকা অথবা তীব্র ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এছাড়াও যখন হরমোনের পরিবর্তন হয় কোষ্ঠকাঠিন্য ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার ফলে তৃতীয় মাসে তলপেটে ব্যথা হতে পারে। যদিও তিন মাসে গর্ভপাতের সম্ভাবনা কমে যায় তবুও--

যদি গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা অনুভূত হওয়ার সাথে সাথে রক্তপাত শুরু হয়ে যায় তাহলে এটা হতে পারে গর্ভপাতের লক্ষণ। এরকম সমস্যা দেখা দিলে খুব দ্রুত ডাক্তারের সাথে দেখা করা জরুরী। এছাড়াও কিছু কিছু ক্ষেত্রে  ইউরিনারি ইনফেকশনের কারনে তলপেটে প্রচুর ব্যথা অনুভূত হতে পারে এক্ষেত্রে ব্যাথার সাথে জ্বর অথবা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। 

তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা হলে যা যা করবেনঃ 

  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া
  • হালকা হাঁটা বা শারীরিক অনুশীলন করা
  • প্রচুর পানি পান করা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সঠিক খাবার গ্রহণ করা

গর্ভাবস্থায় পেটে ব্যথা হলে করণীয়

গর্ভাবস্থায় পেটে ব্যথা হলে করণীয় কি ? গর্ভাবস্থায় পেটে ব্যথা খুব স্বাভাবিক কেনোনা এই সময় পেটে একটু ব্যথা অনুভূত হয়। আপনার ব্যথা যদি অনেক বেশী এবং কম হলে করনীয় ভিন্ন ভিন্ন উপায় হতে পারে। যদি পেটে ব্যথা অনুভূত হয়, তবে কিছু সাধারণ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। নিচে কিছু করণীয় বিষয় উল্লেখ করা হলো:

বিশ্রাম নিন: আপনার পেটে যদি প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে আপনাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।অনেক সময় অতিরিক্ত কাজের জন্য পেটে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। যা পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার মাধ্যমে ঠিক হয়ে যেতে পারে। 

শরীরে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করুন: শরীরে পানির পরিমাণ কমে গিয়ে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডিহাইড্রেশনের ফলে শরীরে অথবা পেশীতে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। তাই এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। নিয়মিত পানি পান করা ফলে বিভিন্ন মারাত্মক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

পেটের অবস্থান পরিবর্তন করুন: বিভিন্ন সময়  শোয়ার বা বসার অবস্থান পরিবর্তন করার মাধ্যমে পেটের ব্যথা কমে যেতে পারে। তাই পেটের ব্যথা কমানোর জন্য পেটের অবস্থান পরিবর্তন করুন। তাই সবসময় চেষ্টা করুন আরামদায়ক স্থানে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য। 

গরম পানি থেরাপি ব্যবহার করুন: আপনারা যদি ব্যথা কমানোর জন্য গরম পানির থেরাপি ব্যবহার করেন তাহলে অনেক উপকার পেতে পারেন। গরম পানির থেরাপি ব্যবহার করার ফলে ব্যথা কমে যেতে শুরু করে। তবে খুব বেশি গরম পানি ব্যবহার করবেন না এতে আরো সমস্যা বৃদ্ধি হতে পারে। 

হালকা হাঁটা: বিভিন্ন সময় গ্যাস অথবা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার কারণে ব্যথা হতে পারে। তাই ব্যথা হলে অল্প কিছু সময় হাটাহাটি করতে পারেন এতে ব্যথা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে চেষ্টা করবেন সীমিত পরিমান হাটাহাটি করার জন্য। অতিরিক্ত হাটাহাটি বা চাপ থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। 

সঠিক খাদ্য গ্রহণ:গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন হওয়ার কারণে পেটে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার ফলে পেটে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এজন্য ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার, প্রচুর পানি ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করার মাধ্যমে হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং তলপেটে ব্যথা থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। 

আপনার যদি ব্যথা অনেক তীব্র হয়, দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং মাথা ঘোরা, গর্ভপাত এবং জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দিলে খুব দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। 

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি:

  • যদি তলপেটে তীব্র ও ধারাবাহিক ব্যথা হয়।
  • ব্যথার সাথে রক্তপাত, মাথা ঘোরা, বা বমি হয়।
  • ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা ক্রমাগত বাড়তে থাকে।
  • প্রস্রাবের সময় জ্বালা বা অস্বস্তি হয়।

গর্ভাবস্থায় তলপেট ভারী লাগে কেন

গর্ভাবস্থায় তলপেট ভারী লাগে কেন আপনারা অনেকেই জানেন না। গর্ভাবস্থায় তলপেট ভারী লাগা একটি সাধারণ অনুভূতি এটা খুব স্বাভাবিক এক বিষয় বিশেষ করে দুই এবং তিন নাম্বার মাসে। তলপেট ভারী লাগার কয়েকটি প্রধান কারণ হলো:

  1. গর্ভাশয়ের বৃদ্ধি হওয়ার জন্য
  2. অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য
  3. রাউন্ড লিগামেন্ট প্রসারণ হওয়ার কারণে 
  4. হরমোনের প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য 
  5. গ্যাস ও বদহজম এর কারণে 
  6. কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দিলে 
  7.  ভ্রূণের অবস্থান পরিবর্তন হওয়ার কারণে 

গর্ভাবস্থায় তলপেট ভারী লাগলে কি করবেনঃ 

  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
  • প্রচুর পানি পান করুন।
  • ভারী কাজ বা শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলুন।
  • হালকা হাঁটা বা অনুশীলন করলে আরাম পাওয়া যেতে পারে।
  • ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করে কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ করুন।

কনসিভ করলে কি পেটে ব্যথা হয়

কনসিভ করলে কি পেটে ব্যথা হয় ? নসিভ করার পর পেটে ব্যথা হয়া স্বাভাবিক। কেনোনা কনসিভ করার পরে নিষিক্ত ডিম্বাণু যখন গর্ভাশয়ের প্রাচীরে স্থাপন হতে শুরু করে তখন পেটে অল্প ব্যথা হতে পারে। এই প্রক্রিয়া সাধারণত ১০-১২ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হয়। এই সময়ে হালকা ব্যথা হতে পারে। তাই এই সময় ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য---
  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে 
  • প্রচুর পানি পান করুন।
  • পেটের ব্যথা বা অস্বস্তি খুব বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

গর্ভাবস্থায় পেট বড় হয় কখন

গর্ভাবস্থায় পেট বড় হয় কখন আপনারা অনেকেই এই বিষয় জানেন না। গর্ভাবস্থায় পেট সাধারণত দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের (প্রায় ১২-১৬ সপ্তাহের) দিকে বড় হতে শুরু করে। গর্ভধারনের প্রথম দিকে পেটের তেমন পরিবর্তন দেখা যায় না। এখানে ধাপে ধাপে পেট বড় হওয়ার সময়সূচি এবং কারণগুলো উল্লেখ করা হলো:

১. প্রথম ত্রৈমাসিক (০-১২ সপ্তাহ):

প্রথমে পেট তেমন বেশী বড় দেখা যায় না। এর কারণ হচ্ছে এই সময় গর্ভাশয় অনেক ছোট থাকে এবং এটা পেটের বাইরে থেকে দেখা যায় না। তবে কিছু সময় গ্যাসের জন্য অথবা হরমোনজনিত কারণে মায়ের পেট কিছু ফোলা অনুভূত হতে পারে। 

২. দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (১৩-২৬ সপ্তাহ):

দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে গর্ভাশয় দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এবং এই সময়ে পেট বড় হতে শুরু করে। ১২-১৬ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভাশয় অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। 

৩. তৃতীয় ত্রৈমাসিক (২৭-৪০ সপ্তাহ):

তৃতীয় ত্রৈমাসিকে পেট সবচেয়ে বেশি বড় হতে শুরু করে কারণ এই সময় ভ্রূণ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এর কারণে এ সময়ে পেট সবচেয়ে বেশি বড় দেখা যায় তলপেট ভারী অনুভূত হতে পারে। 

গর্ভাবস্থার সময় পেট বড় হওয়া স্বাভাবিক একটা বিষয় তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোন সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার জরুরী। 
গর্ভাবস্থায় -তলপেটে -ব্যথা -হয় -কেন

গর্ভাবস্থায় পেট ছোট হওয়ার কারণ

গর্ভাবস্থায় পেট ছোট হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। তবে প্রতিটি শরীর এবং গর্ভাবস্থায় অভিজ্ঞতা আলাদা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় পেট ছোট হওয়ার কারণ হলো; 
শরীরের গঠন: মহিলাদের উচ্চতা এবং শরীরে আকার এর উপরে ভিত্তি করে গর্ভাবস্থায় পেটের আকার ছোট বড় হতে পারে। যেসব মহিলা একটু লম্বাকৃতির হয়ে থাকে তাদের পেট ছড়িয়ে থাকে এবং পেট অনেক ছোট দেখা যায়। 

গর্ভাশয়ের পজিশন: বিভিন্ন সময় গর্ভাশয় পিছনের দিকে অবস্থান করার কারণে পেটের আকার অনেক ছোট মনে হয়। 

প্রথম গর্ভাবস্থা: প্রথম গর্ভাবস্থায় পেট অনেকটা ছোট মনে হয়। কারণ হচ্ছে বিভিন্ন পেশি  বেশি দৃঢ় থাকে এবং ধীরে ধীরে প্রসারিত হতে শুরু করে। 

বাচ্চার পজিশন: অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চার পজিশন এর কারণে পেট ছোট মনে হয়। এর কারণ হচ্ছে বাচ্চা পিছন দিকে মুখ ফিরে থাকলে পেট বেশি বড় দেখা যায় না অনেক ছোট মনে হয়। 

গর্ভকালীন সময়ের প্রক্রিয়া: প্রথম গর্ভকালীন সময়ে পেট অনেকটা ছোট দেখা যায়। যা পরে ধীরে ধীরে বড় হতে শুরু করে। এছাড়াও বাচ্চার বৃদ্ধি সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য নিয়মিত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। 

আপনার যদি মনে হয় আপনার পেট অনেক ছোট তাহলে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।ডাক্তারেরা প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করার মাধ্যমে নিশ্চিত করবে আপনার শিশুর বৃদ্ধি সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা। 

গর্ভাবস্থায় পেটের বাম পাশে ব্যথা হওয়ার কারণ

গর্ভাবস্থায় পেটের বাম পাশে ব্যথা হওয়ার কারণ বিভিন্ন হতে পারে। গর্ভাবস্থার সময় পেটের বাম পাশে ব্যাথা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা হতে পারে মারাত্মক ক্ষতিকর। পেটের বাম পাশে ব্যথা হওয়ার কারণগুলো হচ্ছে---

  • গর্ভাবস্থার সময় দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক এ শরীরের বিভিন্ন পাশে টান অনুভূত হতে পারে। যার ফলে ধীরে ধীরে গর্ভাশয় বড় হতে শুরু করে। এর কারণে পেটে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। 
  • গর্ভাবস্থার সময় হরমোনে পরিবর্তনের কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণে পেটের বাম পাশে ব্যাথা অনুভূত হতে পারে। 
  • বাচ্চার নড়াচড়া করার কারণে পেটে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 
  • শরীরের ওজন বৃদ্ধি শুরু করলে শরীরের পেশীতে চাপ পড়ার কারণে পেটের বাম পাশে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। 
  • গর্ভাবস্থার কব্জির সমস্যার কারণে পেটের বাম পাশে ব্যথা হতে পারে। 
  • যদি প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হওয়ার পাশাপাশি জ্বর, প্রসাবে সমস্যা অথবা বমির সমস্যা দেখা দেয় তাহলে এটা হতে পারে কিডনির পাথরের লক্ষণ। এমন হলে খুব দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। 
  • এছাড়াও গর্ভাবস্থায় প্রথমদিকে এমনিতেই পেটের বাম পাশে ব্যাথা অনুভূত হয় যা স্বাভাবিক। 
আপনাদের যদি গর্ভাবস্থায় পেটের বাম পাশে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয় এবং পাশাপাশি অন্য কোন উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। 

লেখকের শেষকথাঃ গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হয় কেন

প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হয় কেন এবং কি করলে এসব ব্যাথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় সে উপায় সম্পর্কে। এছাড়াও আজকের এই পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি গর্ব অবস্থায় প্রথম মাসে তলপেটে ব্যাথা অনুভূত হয় কেন। এবং কিভাবে এসব ব্যাথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় সেই উপায়। 

আশা করা যায় আজকের এই পোস্ট গর্ভাবস্থায় তলপেটে ব্যথা হয় কেন আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। যদি এই পোস্ট আপনাদের ভাল লাগে তাহলে কমেন্ট করুন

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইউনিকমিস্ট্রির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন আমরা আপনাদের পজিটিভ কমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছি

comment url