টাইফয়েড জ্বর কতদিন পর্যন্ত থাকে এবং সঠিক চিকিৎসা

 শিশুর টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ সম্পর্কে জানুন

টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে তা জানার জন্য অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাই আজকের পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলচনা করবো টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে এবং টাইফয়েড জ্বর কি ছোঁয়াচে না-কি তা সম্পর্কে। 

টাইফয়েড-জ্বর-কতদিন-থাকে

টাইফয়েড জ্বরের কারণ হতে পারে নোংরা পরিবেশ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যভাস এবং পানির মাধ্যমে। এই রোগ এর সঠিক সময়ে চিকিৎসা করা হলে পরবরর্তীতে আরো বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হতে পারে। তাই আমাদের জানা উচিত টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে সে সম্পর্কে। তো চলুন বিস্তারিত আরো জেনে নেওয়া যাক টাইফয়েড জ্বর কি ছোঁয়াচে নাকি সম্পর্কে। 

পেইজ সুচিপত্র: টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে 

টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে 

টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে তা আমরা অনেকেই জানি না। আজকের পোস্টে আমরা আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলাপ আলোচনা করবো যে টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে? আমাদের বিভিন্ন কারণে জানার প্রয়োজন হয় যে টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে। এই বিষয়ে জানার কারণ হচ্ছে টাইফয়েড জ্বর একটু মারাত্মক সংক্রামক। 

যা স্যালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়ার কারণে সংক্রমণ করে থাকে। টাইফয়েড জ্বর এর সময়কাল আমাদের জানা প্রয়োজন পড়ে কারণ টাইফয়েড জ্বরের রোগীকে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন এবং রোগীর সেবা-যত্ন সঠিকভাবে করার জন্য।টাইফয়েড রোগীকে সঠিক চিকিৎসা প্রয়োগ করার জন্য টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে তা জানা প্রয়োজন পড়ে। 

টাইফয়েড জ্বর সাধারণত স্থায়ী হয়ে থাকে ৭ থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত। এর বেশি সময় কাল ধরে টাইফয়েড জ্বর স্থায়ী হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।তাছাড়াও টাইফয়েড জ্বর যদি অনেক বেশি সময় ধরে চলমান থাকে তাহলে রোগীর বিভিন্ন সমস্যা যেমন ডিহাইড্রেশন, অঙ্গের সমস্যা সহ বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। 

এছাড়াও টাইফয়েড জ্বর এর রোগীকে আলাদা রাখা এবং তার স্পর্শে আশা সকল ব্যক্তিরা যাতে এ রোগে সংক্রমিত না হয়। এই ধরনের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচার জন্য হলেও আমাদের জানা প্রয়োজন হয় টাইফয়েড জ্বর কতদিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। তাই আমাদের যদি জানা থাকে টাইফয়েড জ্বর কতদিন স্থায়ী থাকে তাহলে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। 

টাইফয়েড জ্বর কি ছোঁয়াচে

টাইফয়েড জ্বর কি ছোঁয়াচে আপনারা অনেকেই এই বিষয়ে জানার জন্য প্রতিনিয়ত গুগলে সার্চ করে থাকেন। টাইফয়েড জ্বর কি ছোঁয়াচে? উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ। টাইফয়েড জ্বর ছোঁয়াচে একটি রোগ। এ জ্বর সাধারণত এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের ফলে হয়ে থাকে এবং এটি সংক্রমিত ব্যক্তির মল মূত্রের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। 
তাছাড়াও টাইফয়েড জ্বর অপরিষ্কার পানি, অথবা অপরিষ্কার খাবার এবং অপরিষ্কার পরিবেশের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। নিচে টাইফয়েড জ্বর ছড়ানোর প্রধান কারণগুলো নিচে আলোচনা করা হলো: 

অপরিষ্কার পানি এবং খাবার: টাইফয়েড জ্বর সাধারণত অপরিষ্কার পানি এবং খাবারের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে।এই রোগ হওয়ার কারণ হচ্ছে স্যালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়া যখন পানি অথবা খাবারকে দূষিত করে তখন এসব খাবার গ্রহণ করার ফলে টাইফয়েড জ্বর হয়ে থাকে। 

অপরিষ্কার হাত: অপরিষ্কার হাতের মাধ্যমে এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সবসময় হাত পরিশষ্কার রাখতে হবে। এবং এই রোগে সংক্রমিত ব্যক্তি যদি টয়লেট ব্যবহার করার পর হাত পরিষ্কার না করে যদি কোনো খাবার বা পানীয় স্পর্শ করেন তাহলে এর মাধ্যমে এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারেন। 

সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা:সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরা এই রোগে আক্রমন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেও যদি এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির কোনো ব্যবহার করা জিনিস ব্যবহার করেন তাহলে তিনিও এই রোগ এ আক্রান্ত হতে পারেন। তাদের ব্যবহৃত টিউব, খাবারের আইটেম ইত্যাদি ব্যবহার করলে এই রোগ এ আক্রান্ত হতে পারে। 

টাইফয়েড কেন হয়

টাইফয়েড কেন হয় তা আমরা অনেকেই জানি না। এই টাইফয়েড রোগ হওয়ার কারণ হচ্ছে  স্যালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়ার কারণে। আর এই রোগ অশুদ্ধ পানি, খাদ্য অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে বের হওয়া মল্মুত্র এর মাধ্যমে ছড়ায়। টাইফয়েড কেন হয় তার কিছু প্রধান কারণ নিচে দেওয়া হল: 

অশুদ্ধ পানি ও খাদ্য: টাইফয়েড জ্বরের প্রধান কারণ হচ্ছে অশুদ্ধ পানি এবং খাদ্য। যখন পানি এবং খাদ্য দূষিত হয়ে যায় তখন এই ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে এবং এসব খাবার অথবা পানি যে খেয়ে থাকে সে  এই রোগ এ আক্রান্ত হয়। 

অসাবধানতা: টাইফয়েড রোগ হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে দূষিত পরিবেশ, হাত ভালোভাবে পরিষ্কার না করা, এবং মলমূত্র সঠিকভাবে নিষ্কাশন না করা। টাইফয়েড একটা খুবই মারাত্মক রোগ। তাই এ রোগের সঠিক চিকিৎসা না করলে মারাত্মক সমস্যার মুখোমুখি হওয়া লাগতে পারে। তাই এ রোগের হাত থেকে বাঁচার জন্য সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী। 

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ: 

  • প্রচন্ড জ্বর
  • মাথাব্যথা
  • শরীর দুর্বলতা
  • পেট ব্যথা
  • অরুচি
  • ডায়রিয়া
  • কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি
টাইফয়েড-জ্বর-কতদিন-থাকে

টাইফয়েড জ্বরের ঔষধের নাম

টাইফয়েড জ্বরের ঔষধের নাম সম্পর্কে জানার জন্য আপনারা অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাই আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করবো টাইফয়েড জ্বরের ঔষধের নাম সম্পর্কে। টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসায় সাধারণত এন্টিবায়োটিক ঔষধ ব্যবহার করা হয়। আক্রান্ত রোগীর অবস্থার উপর ভিত্তি করে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়। 

নিচে টাইফয়েড জ্বরের কিছু এন্টিবায়োটিক এর নাম উল্লেখ করা হলো: 
  • সেফট্রিয়াকসন (Ceftriaxone)
  • সেফুদোক্সিম (Cefodoxime)
  • ফ্লুক্লোক্সাসিলিন (Flucloxacillin)
  • অ্যামোক্সিসিলিন (Amoxicillin)
  • ক্লোরামফেনিকল (Chloramphenicol)
সাধারণত রোগের অবস্থার উপর ভিত্তি করে ডাক্তার এসব ঔষধ সেবন করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।এছাড়াও রোগীর টাইফয়েড জ্বরের সঙ্গে যদি কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা অন্য কোন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে রোগীকে স্যালাইন অথবা ইলেকট্রোলাইট প্রয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।এছাড়াও টাইফয়েড জ্বরের জন্য সঠিক চিকিৎসা জরুরী। তাই এ রোগ হাত থেকে বাঁচার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে ঔষধ এবং অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা উচিত। 

টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত

টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত তা আপনারা অনেকেই জানেন না। আজকের পোস্টে আমরা আপনাদের জানাবো টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত সে সম্পর্কে। টাইফয়েড জ্বর হলে কিছু খাবার খেলে রোগীর উপকার হতে পারে। এছাড়া এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো যদি টাইফয়েড জ্বরের রোগী গ্রহণ করে থাকে তাহলে সমস্যা হতে পারে। 
টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীর সবসময় তরল খাবার বেশি পরিমানে গ্রহণ করা উচিত। কেননা এ রোগ আক্রান্ত হলে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেয়। এজন্য শরীরে অতিরিক্ত পানির প্রয়োজন হয়। তাই শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করার জন্য অনেক বেশি পরিমাণে পানি, ফলের রস, জুস, সুপ ইত্যাদি বেশি করে পান করতে হবে। 

তাছাড়াও যারা টাইফয়েডে আক্রান্ত তাদের সবসময় হালকা ধরনের খাবার খাওয়া উচিত। এজন্য ভাত,খিচুড়ি,পালংশাক,রুটি,মিষ্টি আলু ইত্যাদি খেলে উপকার পাওয়া যাবে। কারণ এসব খাবার খুব অল্প সময়ে হজম হয়ে যায় এবং এগুলো খাবার পেটের জন্য অনেক উপকারী।এছাড়াও অতিরিক্ত ফল খেতে হবে।আপনারা কলা, আপেল, পেয়ারা, মাল্টা, লেবু ইত্যাদি ফল খেতে পারেন। 

এছারাও টাইফয়েড জ্বরের সময় কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। যেমন: 
  • অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার
  • অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার
  • ভাজা- পড়া
  • কাঁচা শাকসবজি
টাইফয়েড জ্বরের সময় এসব খাবার এরিয়ে চলা উচিত্‌।

টাইফয়েড টেস্ট এর নাম

টাইফয়েড টেস্ট এর নাম সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চান। টাইফয়েড জ্বর দেখা দিলে সাধারণত কিছু টেস্ট করতে হয়। এই টেস্ট গুলো করার মাধ্যমে নির্ণয় করা যায় টাইফয়েড জ্বরের ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি রয়েছে কিনা। টাইফয়েড জ্বরের সাধারণ কিছু টেস্টের নাম নিচে দেওয়া হল: 
  • থার্মাল ফ্লাকস: এটা এক ধরনের এন্টিবডি পরীক্ষা যা টাইফয়েড জ্বর এর ব্যাকটেরিয়া শরীরে উপস্থিত রয়েছে কিনা তা যাচাই বাছাই করতে ব্যবহার করা হয়। 
  • ব্লাড কালচার: এ পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা যায় আমাদের শরীরে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি রয়েছে কিনা। এ পরীক্ষা রক্তের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। এবং এ পরীক্ষা অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। 
  • স্টুল কালচার: এ পরীক্ষা করা হয় যখন রোগী অনেকদিন থেকে পেট এর সমসসায় ভুগে তখন। এই পরীক্ষা করা হয় আক্রান্ত রোগীর মলের সাহায্য নিয়ে। 
  • ইউরিন কালচার: যদি রোগীর ইউরিনে কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে এই টেস্ট করা হয়। এই টেস্ট করা হয়ে থাকে রোগী র টাইফয়েড এর ব্যাকটেরিয়া রয়েছ কিনা তা নির্ণয় করার জন্য। 
এইসকল টেস্ট করার মাধ্যমে টাইফয়েড এ আক্রান্ত রোগীর ব্যাক্টেরিয়া পরীক্ষা করা হয়। তাই আপনারা কোনো পরীক্ষা করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী টেস্ট করতে হবে। 

টাইফয়েড জ্বর হলে কি গোসল করা যায় ? 

টাইফয়েড জ্বর হলে কি গোসল করা যায় আপনারা অনেকেই জানেন না। টাইফয়েড জ্বর হলে আপনারা গোসল করতে পারবেন কিন্তু আপনাকে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। নিচে কিছু বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল: 

আপনারা জ্বর যদি অনেক বেশি হয় এবং শরীর অনেক দুর্বল হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে সাবধান এর সাথে গোসল সম্পন্ন করতে হবে। কারণ গোসল করার পর আপনার শরিরের তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই গোসল করার সময় অতিরিক্ত ঠান্ডা এবং গরম পানি এড়িয়ে চলতে হবে। এবং আপনাকে গরম পানি দিয়ে গোসল সম্পন্ন করতে হবে। 
টাইফয়েড জ্বরের সময় শরীর অনেক দুর্বল থাকে। তাই আমরা যদি গরম পানি দিয়ে গোসল করি তাহলে আমাদের শরীরের দুর্বলতা কিছুটা কমে যাবে। এক্ষেত্রে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে পানি যাতে অতিরিক্ত গরম না হয়। এবং আপনাকে গোসল করার সময় খুব শক্ত বা গন্ধযুক্ত সাবান ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। 

তা না হলে আপনার ত্বকের শুষ্কতা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ত্বক জ্বালাপোড়া করতে পারে। এজন্য আপনাকে হালকা ধরনের সাবান গোসল করার সময় ব্যবহার করতে হবে। তাছাড়া টাইফয়েড জ্বর দেখা দিলে শরীর অনেক দুর্বল থাকে এবং ক্লান্তি ভাব অনুভব হয়। তাই আপনারা যদি গোসল করার পর অনেক বেশি ক্লান্তি অনুভব করেন তাহলে বিশ্রাম নিতে হবে। 

তাই আপনার জ্বর যদি অনেক বেশি থাকে তাহলে গোসল করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কিন্তু আপনি যদি মনে করেন আপনি আপনি সুস্থতা অনুভব করছেন তাহলে হালকা গরম পানিতে গোসল করতে পারবেন।তবে আপনার জ্বরের পরিমাণ যদি অনেক বেশি হয় এবং শরীর অনেক দুর্বল থাকে তাহলে গোসল করা থেকে বিরত থাকুন।  

টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা

টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা বিভিন্ন রকমের হতে পারে। এই সমস্যাগুলো হয়ে থাকে টাইফয়েড জ্বর হওয়ার কারণে। টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা গুলো নিচে আলোচনা করা হলো: 
  • শক্তি কমে যাওয়া: টাইফয়েড জ্বর হওয়ার কারণে শরীরের শক্তি কমে যেতে পারে। এছাড়াও শরীরে ক্লান্তি অনুভব হতে পারে। এবং অনেকের ক্ষেত্রে শরীরের শক্তি ফিরে পেতে অনেকদিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। 
  • পেটের সমস্যা: টাইফয়েড জ্বরের কারণে পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। টাইফয়েড দেখা দিলে পাকস্থলী বা অন্ত্রের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। টাইফয়েড জ্বরের পরবর্তীতে পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন: পেট ফাঁপা, গ্যাসের সমস্যা, হজমের সমস্যা ইত্যাদি হতে পারে। 
  • মনোভাবের পরিবর্তন: টাইফয়েড জ্বরের পরবর্তীতে মনোভাবের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। অনেকেই হতাশ হয়ে থাকে, এবং শরীরে দুর্বলতা অনুভব করতে থাকে। 
  • ইমিউন সিস্টেমের দুর্বলতা: টাইফয়েড জ্বর দেখা দিলে শরীরের ইউনিয়ন সিস্টেম দুর্বল হতে থাকে।যার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা কমে যায়। যার ফলে শরীরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 
  • হৃৎপিণ্ডের সমস্যা: টাইফয়েড রোগ দেখা দেওয়ার পর অনেকের ক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ড সমস্যা দেখা দেয়।যেসব ব্যক্তিরা আগে থেকে হৃদপিন্ডের সমস্যায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। 
  • বিভিন্ন অঙ্গের সমস্যা: টাইফয়েড জ্বরের পরে অনেকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অঙ্গের সমস্যা দেখা দিতে পারে। টাইফয়েড জ্বর হওয়ার পর অনেকের লিভার এবং কিডনির সমস্যা দেখা দেয়। 
  • দীর্ঘস্থায়ী জ্বর: টাইফয়েড জ্বর থেকে সুস্থ হওয়ার পরেও অনেকের দীর্ঘস্থায়ী জ্বরের সমস্যা দেখা দেয়।অনেকের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী জ্বর হয়ে থাকে। যা অনেকদিন পর্যন্ত চলমান থাকে। 

টাইফয়েড জ্বর পরবর্তীতে সুস্থ হওয়ার উপায়

  • পর্যাপ্ত পরিমান বিশ্রাম এবং ঘুমাতে হবে। 
  • সব সময় পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। 
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। 
  • ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। 
  • সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। 
  • সাবান দিয়ে হাত ধরা অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। 

টাইফয়েড এর ক্ষতিকর দিক

টাইফয়েড এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চান। আজকের পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো টাইফয়েড এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। টাইফয়েড এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হল: 
  • অঙ্গের ক্ষতি: টাইফয়েড এর কারণে অঙ্গের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকে। কিডনি, লিভার, হৃৎপিণ্ড ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয় টাইফয়েডের পরে। এছারাও আন্ত্রিক রক্তপাত হতে পারে। 
  • রক্তনালীতে সংক্রম: টাইফয়েড এর কারণে রক্তনালীতে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। যার ফলে মস্তিষ্কে কার্যক্রম বাধা সৃষ্টি করতে পারে এবং তীব্র অসুস্থতা অনুভব হতে পারে। 
  • মস্তিষ্কে প্রভাব: টাইফয়েড এর কারণে মস্তিষ্কে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। যার ফলে মস্তিষ্কে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
এছাড়াও টাইফয়েড জ্বর দেখা দিলে জ্বর দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে, পেটের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এছাড়াও আর্থিক খরচ অনেক বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে। 

টাইফয়েড হলে কি চুল পড়ে যায়

টাইফয়েড হলে কি চুল পড়ে যায়? হ্যাঁ। টাইফয়েড হলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি চুল পড়ার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। নিচে চুল পড়ার কিছু কারণ আলোচনা করা হল: 
টাইফয়েড হলে শরীরের পুষ্টি কমে যেতে শুরু করে। যার ফলে শরীরে চুলের বৃদ্ধি খুব ধীরে হয় এবং চুল পড়া সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়াও টাইফয়েড হলে শরীরের স্টেজ বৃদ্ধি পায় যার ফলে চুল পড়ার সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও টাইফয়েড জ্বরের সময় হরমোনাল বিভিন্ন পরিবর্তন হয়ে থাকে যার ফলে চুল পড়া সমস্যা হতে পারে। 
টাইফয়েড-জ্বর-কতদিন-থাকে
তাছাড়াও টাইফয়েড জ্বর হলে আমরা বিভিন্ন ধরনের ঔষধ সেবন করে থাকে। সেইসব ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে চুল পড়ার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাব দেখা দিলে চুল পড়া সমস্যা হয়ে থাকে। আর টাইফয়েড জ্বরের কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাব দেখা দেয়। 

চুল পড়া প্রতিরোধের উপায়:

  • সঠিক পুষ্টি গ্রহণ করতে হবে। 
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে হবে এবং ঘুমাতে হবে। 
  • প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে। 
  • ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। 

টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায়

টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায় সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চান। আমরা এখন বিস্তারিত আলোচনা করবো টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায় সম্পর্কে। 

  1. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ গ্রহণ করুন । 
  2. পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন
  3. পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন
  4. পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করার চেষ্টা করুন। 
  5. হালকা খাবার গ্রহণ করুন। 
  6. অতিরিক্ত জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল গ্রহণ করুন। 
  7. সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন। 
  8. মানসিক চাপমুক্ত থাকুন। 
উপরের উপায় গুলো মেনে চললে আপনারা টাইফয়েড জ্বর থেকে মুক্তি লাভ করতে পারবেন।টাইফয়েড জ্বর একটি মারাত্মক জ্বর। তাই এই সমস্যা সমাধানের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন। 

শেষকথা: টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে

প্রিয় পাঠক আজকের পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে এবং এই জ্বর থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে। আশা করা যায় এই পোস্টটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। পোস্টটি যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই একটু কমেন্ট করুন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইউনিকমিস্ট্রির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন আমরা আপনাদের পজিটিভ কমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছি

comment url